ডেস্ক রিপোর্ট :
বাংলাদেশ থেকে মোটরসাইকেল যোগে ওমরাহ পালন করতে যাচ্ছেন ভ্রমণপ্রিয় তরুণ মাসদাক চৌধুরী। তিনি এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক রাজধানী দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। সফর সঙ্গী হিসেবে আছেন তার সহধর্মিণী মালিহা।
মুহাম্মদ মাসদাক চৌধুরী চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার নজুমিয়া হাট বুড়িশ্চর এলাকার মুহাম্মদ মুহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি মেজো।
দুঃসাহসিক এই ভ্রমণে তার সঙ্গী চট্টগ্রাম নম্বর প্লেট সম্বলিত একটি মোটরসাইকেল। চট্টগ্রামের হাটহাজারীর এই তরুণ ইতোমধ্যে ৮টি দেশের ১৬ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে গত ১৬ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছান। গত ১১ আগস্ট চট্টগ্রাম থেকে ওমরাহ পালনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন তিনি।
প্রথমে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে কলকাতায় পৌঁছান মাসদাক চৌধুরী। তিনি যাত্রাকালে ভারতে ১৪ দিন, পাকিস্তানে ২৬ দিন, আফগানিস্তানে ১২ দিন, তাজিকিস্তানে ১১ দিন, উজবেকিস্তানে ৪ দিন, ইরানে ২৬ দিন ও বর্তমানে আমিরাতে ১৮ দিন অতিবাহিত করছেন।
প্রতিটি দেশ তিনি সড়ক পথে পাড়ি দিলেও কেবল আরব দেশে সড়ক সুবিধা না থাকায় পানিপথ ব্যবহার করতে হয়েছে মোটরসাইকেল পারাপারে। তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি দেশ থেকে এতটা পথ মোটরসাইকেল নিয়ে পাড়ি দিয়েছেন। তবে এবারই প্রথম নয়। ২০১৯ সালেও তিনি ওমরার উদ্দেশে বের হয়েছিলেন। তখন অবশ্য একাই বের হয়েছিলেন। তবে করোনায় বর্ডারের বিধিনিষেধ থাকায় অনিচ্ছা সত্ত্বেও দুবাই থেকে দেশে ফিরতে হয়েছিল মাসদাক চৌধুরীকে।
এবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাতটি প্রদেশ ঘুরে দেখেছেন তিনি। বর্তমানে দুবাইতে অবস্থানকালে তাকে দুবাইয়ের বাইক রাইডাররা সম্মানিত করেছেন। ভ্রমণের কারণে বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমেও উঠে এসেছেন এই দম্পতি, পেয়েছেন ভালোবাসাও। দুবাইয়ের রাস্তায় চট্ট মেট্রো নম্বর প্লেট দেখে রীতিমতো অবাক হয়েছেন অনেকে।
এ বিষয়ে চাইলে মাসদাক চৌধুরী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের বড় বাধা বা সমস্যার সম্মুখীন হইনি। সবকিছু ভালো ছিল। আমি যেহেতু একজন ট্রাভেলার, আমার এই জার্নিটা বাইকে করে যে আমি নিজ বাহন নিয়ে এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাচ্ছি, সেটা প্রত্যেকটা দেশের মানুষ সম্মানের সঙ্গে দেখছে। সবাই যতটুকু পারছে সাপোর্ট করছে, সেটা যে দেশেই হোক না কেন। আর লাল সবুজের পতাকা যখন দেখছে তখন আরও কৌতূহল জাগছে। অনেক দেশের মানুষ বাংলাদেশ সম্পর্কে জানে না, তাদের বাংলাদেশ সম্পর্কে জানিয়েছি। যেমন তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তানের অনেকে বাংলাদেশ চেনেই না। তাদের বাংলাদেশ সম্পর্কে বলছি।’
তিনি বলেন, ‘যখন আমি যে দেশে ট্রাভেল করছি, লোকাল লোকজন যারা আছে তাদের সঙ্গে যখনই আমার সাক্ষাৎ হয়েছে চেষ্টা করেছি নিজের দেশ সম্পর্কে বলার। নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে। নতুন নতুন মানুষজনের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। ইরানের মতো দেশে যেখানে আমার টোটালি কেউই পরিচিত ছিল না। এত বড় একটা দেশ কাউকেই আমি চিনতাম না। কিন্তু এখন প্রত্যেকটা শহরে আমার খুব ভালো বন্ধু তৈরি হয়েছে।’
আমিরাতে অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমিরাতে এসে আরও বেশি ভালো লাগছে। এখানে এসে এত বড় একটা বাংলা কমিউনিটি পাচ্ছি, এটা বলার মতো না। বিশাল বড় বাংলাদেশি কমিউনিটি। প্রায় ৪ মাস ধরে দেশের বাইরে থাকার পরও এখানে এসে বাংলাদেশিদের পাচ্ছি, এটা আসলেই বিশাল ব্যাপার আমার জন্য।’