চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :
চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সহিংসতার ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় জামিন পেয়েছেন ৬৩ জন আইনজীবী।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সরকার হাসান শাহরিয়ার শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এর আগে আদালতে এই মামলায় আসামি মোট ৬৬ জন আইনজীবীর মধ্যে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন ৬৩ জন। বিদেশে থাকায় ৩ জন আইনজীবী অনুপস্থিত ছিলেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, এই মামলায় যেসব আইনজীবীদের আসামি করা হয়েছে, তারা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। যিনি মামলা করেছেন, তিনি নিজেও ঘটনাস্থলে ছিলেন না। কোনও আলামতও দিতে পারেননি। আমাদের শুনানিতে সন্তুষ্ট হয়ে আদালত চার্জশিট বা পুলিশ রিপোর্ট না হওয়া পর্যন্ত আইনজীবীদের জামিন দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সামশুল আলম বলেন, এ ধরনের বিস্ফোরক আইনের মামলায় জজ কোর্ট থেকে অতীতে জামিন পায়নি। আমরা শুনানি করেছি। আদালত জামিনের আদেশ দিয়েছেন।
এদিকে সোমবার সকাল থেকে আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশ ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়। আদালত ভবনের তৃতীয় তলায় ছিল কড়া নিরাপত্তা। জামিনের আদেশ দেওয়ার পর আইনজীবীদের একাংশ নিহত অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেন।
গত ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সনাতনী সম্মিলিত জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। এরপর আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজন। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার পর আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম কনভেনশন হলের গলিতে খুন হন অ্যাডভোকেট সাইফুল।
এ ঘটনায় আলিফের ভাই খানে আলম কোতয়ালী থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। ওই মামলায় ১১৬ জনকে আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে ৬৬ জন আইনজীবীর নামও রয়েছে। বাংলাদেশ সনাতনী সম্মিলিত জাগরণ জোটের বিবৃতিতে বলা হয়, চিন্ময় কৃষ্ণের জামিন শুনানিতে যাতে অংশ নিতে না পারেন, সেজন্যই হিন্দু আইনজীবীদের নামে মামলা করা হয়েছে।
মামলার আসামি সাবেক অতিরিক্ত মহানগর পিপি দুলাল দেবনাথ বলেন, আমরা ৬৩ জন আইনজীবী কথিত মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়েছি। শুনানি শেষে আদালত জামিন মঞ্জুর করেছেন। ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদেরকে আসামি করা হয়েছে। অনেকে ওইদিন আদালতেও উপস্থিত ছিলেন না।