কক্সবাজার প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালীর খালে মাথায় হেলমেট ও হাতে গ্লাভস পরা একটি মরদেহ ভেসে এসেছে। দুপুরে উখিয়া খালের ঝিরি দিয়ে কাস্টমস এলাকায় মরদেহটি দেখতে পায় স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের ধারনা, মরদেহটি মিয়ানমারের নিরাপত্তাবাহিনী কিংবা বিদ্রোহী কোনো গোষ্ঠীর সদস্যের হতে পারে। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত কোনো কিছু বলতে পারেনি পুলিশ।
উখিয়া থানা পুলিশ জানায়, নাফ নদীর সঙ্গে সংযোগ থাকা তেলিপাড়া খালের জোয়ারের পানিতে লাশ ভেসে আসতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে খাল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। মরদেহটির পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ জানায়, মরদেহটির মাথায় হেলমেট, হাতে গ্লাভস রয়েছে। লাশটি ফুলে গেছে। পুলিশের ধারণা, এটি কয়েক দিন আগের লাশ।
এর আগে গত শনিবার উখিয়ার সীমান্ত এলাকার রহমতের বিল থেকে অজ্ঞাতপরিচয় আরও একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিচয়হীন সেই মরদেহটি পরে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে পাওয়া গেছে দুটি অবিস্ফোরিত রকেট লঞ্চারের গোলা।
এদিকে টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে সকাল থেকেই আসছে গুলি ও ভারী বিস্ফোরণের শব্দ। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে হোয়াইক্যংসহ আশপাশের এলাকায়।
গত ১৩ নভেম্বর থেকে উত্তর রাখাইন ও প্রতিবেশী দক্ষিণ চিন রাজ্যে মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে আসছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। গোষ্ঠীটি বলছে, রাখাইনের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ও সেনা সদরদপ্তরের দখল নিয়েছে তারা।
সামরিক জান্তা ও বিদ্রোহীদের এ সংঘর্ষে বাংলাদেশ সীমান্তেও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। মিয়ানমার থেকে আসা গোলার আঘাতে একজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। দিনভর সংঘর্ষ আর ওপার থেকে ভেসে আসা তীব্র গোলা–বারুদের শব্দে আতঙ্ক কাটছে না মিয়ানমার সীমান্তে থাকা বাংলাদেশি জনপদগুলোতে।
আরাকান আর্মির সঙ্গে চলমান সংঘাতে টিকতে না পেরে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিচ্ছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্যরা। এখন পর্যন্ত ৩৩০ জন মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
উত্তর রাখাইনেন নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এখন দক্ষিণ রাখাইনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরাকান আর্মি। জান্তা বাহিনীর কাছ থেকে মিয়ানমারের ঐতিহাসিক শহর ম্রউক উর দখল নেওয়ারও দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। রাখাইন রাজ্যে অবস্থিত ম্রউক উর শহর থেকে কক্সবাজার সীমান্তের দুরত্ব ১০০ কিলোমিটার।
দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে নতুন করে দেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে শনিবার বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে রোহিঙ্গারা। তাদের ঠেকাতে সতর্ক অবস্থায় বিজিবি ও কোস্টগার্ড।
বিজিবি বলছে, গত কয়েক দিনে শতাধিক রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঠেকানো হয়েছে।