নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ফজলুল হক মুসলিম হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহ মুহাম্মদ মাসুমসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
আজ বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম মো. আক্তারুজ্জামানের আদালতে তোফাজ্জলের ফুপাতো বোন মোসা. আসমা আক্তার এ মামলা করেন।
তবে এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় আরেকটি মামলা থাকায় আপাতত এই মামলার তদন্ত কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। আগের মামলাটির তদন্ত সাপেক্ষে, তোফাজ্জলের পরিবারের করা মামলাটির বিষয়ে আদেশ দেওয়া হবে বলে আদালত জানিয়েছেন।
বিষয়টি জানিয়েছেন বাদীর আইনজীবী নাজমুল হাসান। তিনি জানান, আগের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া সাপেক্ষে এই আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা চলবে কি না, তা পরে আদালত নির্ধারণ করবেন।
অন্য আসামিরা হলেন জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, ফিরোজ কবির, আবদুস সামাদ, মোত্তাকিন সাকিন শাহ, আল হোসাইন সাজ্জাদ, ওয়াজিবুল আলম, আহসান উল্লাহ, ফজলে রাব্বি, ইয়ামুস জামান, রাশেদ কামাল অনিক, শাহরিয়ার কবির শোভন, মেহেদী হাসান ইমরান ও মো. সুলতান। তাঁরা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ফজলুল হক মুসলিম হলে মানসিক ভারসাম্যহীন তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা করে ওই হলের আবাসিক ছাত্ররা। মোবাইল চুরির অভিযোগ করে তারা ওই যুবককে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারেন।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক তাঁর নাম তোফাজ্জল বলে জানান। তাঁকে হলের ক্যানটিনে নিয়ে খাবার খাওয়ান। এরপর তাঁকে হলের দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় রাত ১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন দুপুরে শাহবাগ থানায় মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় ফজলুল হক মুসলিম হল থেকে অভিযুক্ত ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীকালে ২০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার ছয় শিক্ষার্থী ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন, গণিত বিভাগের আহসান উল্লাহ, জিওগ্রাফির আল হোসাইন সাজ্জাদ ও ওয়াজিবুল আলম ঢাকার প্রধান মহানগর হাকিম আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।