বাগেরহাট প্রতিনিধি :
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারত যদি তাদের বন্দর ব্যবহার করতে দেয় তাহলে নেপাল ও ভুটানের সাথে ট্রানজিট সুবিধা তৈরি হলে মোংলা বন্দরকে একটি আন্তর্জাতিক বন্দরে রুপান্তিত করা সম্ভব। মোংলা বন্দরের সাথে আমরা আখাউড়া ও সিলেটে দুটি স্থলবন্দর সচল করতে যাচ্ছি।’
আজ বুধবার সকালে মোংলা বন্দরের নৌ-চ্যানেল ও জেটি পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চিনা কোম্পানির সঙ্গে এল ও সি-৩ -এর জি টু জি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাথমিক কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে তা সম্পন্ন করা হবে। ফলে মোংলা বন্দর হবে আন্তজার্তক মানের ওনিরাপদ আধুনিক ও স্মার্ট সমুদ্রবন্দর।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা বন্দর এলাকার বিভিন্ন স্থাপনা, ফিল্ড ও জেটির বিভিন্ন সেট পরিদর্শন করেন। এর আগে তিনি সকাল ১০ টায় বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান।
এ সময় নৌপরিবহন উপদেষ্টা বন্দরের ড্রেজিং কার্যক্রম, উন্নয়ন প্রকল্প, জাহাজ, কার্গো, কন্টেইনার, গাড়ি আমদানির বাৎষরিক হিসাব ও বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমের ওপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেখেন। বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন), বিভাগীয় প্রধানগণ, উপদেষ্টার সফরসঙ্গী এবং বন্দরের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, মোংলা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর। ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় এ সমুদ্র বন্দরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজধানী ঢাকা থেকে বন্দরটির সড়ক পথে দূরত্ব মাত্র ২১০ কিলোমিটার। একই সঙ্গে প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে কন্টেইনার টার্মিনাল ও ইয়ার্ডসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে। এর ফলে চট্রগ্রাম বন্দরের ওপর চাপ কমবে এবং মানসম্মত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ভারত, নেপাল ও ভূটানের জন্য এই বন্দরটি ব্যবহারের উপযোগী হবে বলেও জানান তিনি।
উপদেষ্টা এ সময় জানান, খুলনা ও যশোরের বন্ধ ৫টি পাটকল চালুর জন্য চায়না ও দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ইজারা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া এ বন্দরটি এতোই গুরুত্বপূর্ণ যে মোংলা বন্দরটির সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য প্রান্তের রেল ও নৌযোগাযোগ রয়েছে। সুতরাং এ বন্দরটিকে পিছিয়ে রাখার কোনো সুযোগ নেই। মোংলা বন্দরকে আরও আধুনিক ও বিশ্বমানের করে গড়ে তোলার জন্য বেশ কিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে ও কিছু প্রকল্প ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে একটি কাজ দ্রুত করলে মোংলা বন্দরের সুযোগ-সুবিধা কতটুকু তা প্রকাশ পাবে, তা হলো আন্তজার্তিকভাবে এ বন্দর নিয়ে প্রচারণা। বন্দর সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবসায়ীদের বন্দরের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে, আমদানি-রপ্তানিকারক ব্যাবসাযীদের আহ্বান জানাতে হবে এ বন্দর ব্যবহার করার জন্য। তা হলেই মোংলা বন্দর হবে একটি বিশ্বমানের আধুনিক সমুদ্র বন্দর।