নিজস্ব প্রতিবেদক :
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজিবির ওপর অর্পিত দায়িত্ব পেশাদারিত্বের সাথে পালনের আহ্বান জানিয়েছেন বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান।
বুধবার (২০ ডিসেম্বর) ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবস-২০২৩’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিশেষ দরবারে সকল পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজিবি’র মহাপরিচালক বলেন, আজ বাহিনীর সকল সদস্যের জন্য একটি বিশেষ দিন। গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্যমন্ডিত এই বাহিনী আজ ২২৯ বছরে পদার্পণ করল।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালাভের পর থেকে এ বাহিনী ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতা রক্ষা এবং সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি চোরাচালান রোধ, নারী-শিশু ও মাদক পাচার রোধসহ যেকোনো আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনে অত্যন্ত দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছে। স্বাধীনতার পর দেশগঠন এবং দেশ মাতৃকার সেবায় এ বাহিনীর অবদান অনস্বীর্কার্য। দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ যেকোনো দুর্যোগময় মুহুর্তে জনগণের সেবায় তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং সাধারণ মানুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের স্থানীয় ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিশ্বস্ততা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে বিজিবি আজ দেশবাসীর আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নাজমুল হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সানুগ্রহ পৃষ্ঠপোষকতা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় বিজিবি আজ একটি সুসংগঠিত, চৌকস, সুশৃঙ্খল, পেশাদার ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অত্যাধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।
অবাধ, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে বিজিবি’র ওপর অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে পালন করার আহ্বান জানান বিজিবি মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে বিজিবি’র প্রতিটি সদস্য সুশৃঙ্খল ও স্মার্ট সৈনিক হিসেবে অনবদ্য ভূমিকা রাখবে-আজকের দিনে এটাই বিজিবি মহাপরিচালকের প্রত্যাশা।
এর আগে, যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজিবি দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে দিবসের কর্মসূচি অনুযায়ী ফজরের নামাজের পর পিলখানাসহ সারাদেশে বিজিবি’র সকল ইউনিটের মসজিদে বিজিবি’র উত্তরোত্তর অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর সকাল সাড়ে ৬টায় মহাপরিচালকের সচিবালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজিবি’র রেজিমেন্টাল পতাকা উত্তোলন এবং সকাল ৬ টা ৫০ মিনিটে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পিলখানাস্থ ‘সীমান্ত গৌরব’-এ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিজিবি মহাপরিচালক। এরপর সকাল পৌনে ১১ টায় পিলখানাস্থ সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবি মহাপরিচালক বিজিবি সদস্যদের বিশেষ দরবার গ্রহণ করেন।
দরবার শেষে পদোন্নতি প্রাপ্ত ৪ জনকে অনারারী সুবেদার মেজর হতে অনারারি সহকারি পরিচালক এবং ২ জনকে অনারারি সহকারি পরিচালক হতে অনারারী উপপরিচালক পদে র্যাংক ব্যাজ পরিধান করানো হয়। এসময় বিজিবি’র সকল কর্মকর্তা, জুনিয়র কর্মকর্তা ও অন্যান্য পদবীর সৈনিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার সকালে বিজিবি দিবসের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য বিজিবি মহাপরিচালক গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিজিবি মহাপরিচালকসহ বাহিনীর সকল সদস্যকে বিজিবি দিবস উপলক্ষ্যে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি চোরাচালান, মাদক ও মানব পাচাররোধসহ দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় বিজিবি’র ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির বৃহত্তর কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে বিজিবি’র প্রতিটি সদস্যকে আন্তরিকতার সাথে কাজ করার নির্দেশনা প্রদান করেন।