নিজস্ব প্রতিবেদক :
মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পেরিয়ে আর কাউকে আসতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘৩৩০ জন বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), সামরিক বাহিনী এবং সরকারি কর্মকর্তারা যারা আমাদের দেশের বর্ডারের ১০ থেকে ১৫ মাইলের মধ্যে ছিল, তারা পালিয়ে আমাদের দেশে প্রবেশ করেছিল। আমাদের দেশ তাদের এক জায়গায় রেখে দিয়ে তাদের কর্তৃপক্ষকে আবার ইনফর্ম করা হয়। তাদের দেশ থেকে ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছি।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘খুব সুন্দর ব্যবস্থার মাধ্যমে তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এখানে কাউকে ঢুকতে দেব না, আমরা আমাদের সীমান্তের ভেতরে আর কাউকে ঢুকতে দেব না। আমরা মনে করি, যার যার জন্মভূমি সেখানেই থাকবে।’
গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে উত্তর রাখাইন ও প্রতিবেশী দক্ষিণ চিন রাজ্যে মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে আসছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। গোষ্ঠীটি বলছে, রাখাইনের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ও সেনা সদরদপ্তরের দখল নিয়েছে তারা।
সামরিক জান্তা ও বিদ্রোহীদের এ সংঘর্ষে বাংলাদেশ সীমান্তেও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। মিয়ানমার থেকে আসা গোলার আঘাতে একজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। দিনভর সংঘর্ষ, আর ওপার থেকে ভেসে আসা তীব্র গোলা–বারুদের শব্দে আতঙ্ক কাটছে না মিয়ানমার সীমান্তে থাকা বাংলাদেশি জনপদগুলোতে।
আরাকান আর্মির সঙ্গে চলমান সংঘাতে টিকতে না পেরে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী–বিজিপি, সেনা সদস্যসহ বিভিন্ন বিভাগের ৩৩০ কর্মকর্তা। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দুই ধাপে সমুদ্রপথে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।
রাখাইনে সংঘাত তীব্র হওয়ায় সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে নতুন করে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে রোহিঙ্গারাও। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ডের শক্ত অবস্থানের কারণে তারা আসতে পারছে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমরা অনেক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছি, তাদেরকেও আমরা বলছি এবং মিয়ানমার সরকারেও বলছি, বিশ্বের সমস্ত দেশকেও আমরা বলছি, যত দ্রুত এদেরকে আমাদের দেশ থেকে তাদের দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য। আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি। আমরা মনে করি, আমাদের সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।’
এ সময় বিএনপি নেতাদের জামিনের বিষয়েও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এইবার তো তারা (বিএনপি) নির্বাচনই করেননি। কাজেই তারা তো এখন বিরোধী দল বলে দাবি করতে পারেন না। তারা আরেকটি রাজনৈতিক দল যেমন ছোট ছোট অনেক দল আছে, যেগুলো…সেরকম দলের মত আজকে বিএনপির অবস্থান।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘বিচারক মনে করেছেন, তাদের জামিন দিতে হবে, তাদের জামিন দিয়েছে, এখানে আমাদের কিছু করার নেই, বলারও নেই।’