নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ ও বিচার শুরু করতে বিলম্ব আমাদের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার সঙ্গে ক্রমাগত উপহাস এবং এটি বিচারব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে হাইকোর্টের একটি রায়ে পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের ৬৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার এবং তার স্ত্রী এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনিকে ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাড়িতে হত্যা করা হয়। গত ৩০ জুন পর্যন্ত এ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার সময় পিছিয়েছে ১১১ বার।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে ওই হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘আমাদের দেশে হত্যার বিচার হতে কখনও কখনও ২০ বছরের বেশি সময় লাগে। এ ধরনের হত্যাকাণ্ডকে যদি কোনও রাজনৈতিক চেহারা দেওয়া হয়, তাহলে এর চেয়েও বেশি সময় লাগতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার এফআইআর দায়ের করা যায়নি ২১ বছরের বেশি সময় ধরে।’
রায়ে আরও বলা হয়, ‘সাগর-রুনি হত্যা মামলার ঘটনার ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও তদন্ত এখনও শেষ হয়নি এবং সে কারণে এটি এখনও বিচারের আলো দেখতে পারেনি।’
‘দুর্ভাগ্যবশত এই মামলাটি ক্রমাগত আমাদের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থাকে উপহাস করে চলেছে এবং আমাদের অপ্রস্তুত করে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। যা বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলা দ্বারা কিছুটা প্রতিকার হয়েছিল।’
প্রসঙ্গত, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিকে কনডেম সেলে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বেঞ্চের ১৩ মে’র এক রায়ের পূর্ণাঙ্গ পাঠে এসব পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
রায়ে হাইকোর্ট বলেছিলেন, যাদের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে কিন্তু আপিল মুলতবি আছে, তাদের অবশ্যই কনডেম সেলে রাখা যাবে না এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই ধরনের দণ্ডিতদের কনডেম সেল থেকে সাধারণ জেলে স্থানান্তর করতে হবে।
প্রকাশিত রায়ের পূর্ণাঙ্গ পাঠে হাইকোর্ট কারাগারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে কনডেম সেল থেকে বন্দিদের সাধারণ কারাগারে স্থানান্তরের জন্য শিগগির ব্যবস্থা নেওয়ার এবং দুই বছরের মধ্যে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।