আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
২০২০ থেকে ২০২২; এই দুই বছর পুরো পৃথিবী স্থবির হয়ে গিয়েছিল করোনা নামের ভয়ংকর এক মহামারীতে। সারাবিশ্বে এ সময়ের মধ্যে ৬৬ লাখেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ভাইরাসটি। প্রকোপ কমে গেলেও পরবর্তী দুই বছরেও ৪ লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে। বিশাল এ প্রাণহানির পর মহামারির ভয়াল সেই স্মৃতি যখন ভুলতে বসেছে পৃথিবীর মানুষ, ঠিক তখনই পাশের দেশ ভারতে আবারও হানা দিয়েছে ভাইরাসটি। দেশটিতে রীতিমত ভয়ংকর রূপেই ফিরে এসেছে করোনা, মাত্র চারদিনেই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ। শুধু তাই নয়, দেখা মিলেছে ভাইরাসটির চারটি নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্টের।
শনিবার (৩১ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৬ মে পর্যন্ত ভারতে মোট ১,০১০ জন আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড করা হলেও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সরকারি তথ্য দেখাচ্ছে যে, ৩০ মে পর্যন্ত আক্রান্তের এই সংখ্যা ২ হাজার ৭১০ জনে পৌঁছে গেছে। অর্থাৎ, চারদিনেই দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৭০০ জন।
ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের রেকর্ড বলছে, আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি কেরালায়। এরপরের অবস্থানেই আছে মহারাষ্ট্র এবং দিল্লি।
তথ্য অনুসারে, ৩০ মে পর্যন্ত কেরালায় ১ হাজার ১৪৭, মহারাষ্ট্রে ৪২৪, দিল্লিতে ২৯৪, এবং গুজরাটে ২২৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া, তামিলনাড়ুতে এখন পর্যন্ত ১৪৮, কর্ণাটকে ১৪৮ এবং পশ্চিমবঙ্গে ১১৬ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
শুধু তাই নয়, পৃথিবীতে মহামারী হিসেবে আবির্ভূত ভাইরাসটি আবারও ফিরে ধীরে ধীরে গ্রাস করছে ভারতের অন্যান্য রাজ্যও। রাজস্থানে ৫১ জন, উত্তরপ্রদেশে ৪২ জন, পুদুচেরিতে ২৫ জনসহ হরিয়ানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, গোয়ায়ও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রেকর্ড করা হয়েছে। ওড়িশা, পাঞ্জাব ও জম্মু-কাশ্মীরেও সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।
কেবল সংক্রমণই নয়, মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভারতজুড়ে কমপক্ষে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে করোনার কারণে। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র এবং দিল্লিতে মারা যাওয়া দুজনের শরীরে করোনার পাশাপাশি অন্যান্য গুরুতর রোগের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
অবশ্য, ভারতীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা দাবি করছেন, করোনাভাইরাসের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো হালকা প্রকৃতির এবং এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) মহাপরিচালক ডঃ রাজীব বাহল এ বিষয়ে সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে বলেছেন, করোনার নতুন এই রূপটি নিয়ে জনসাধারণের উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই। আমাদের কেবল সতর্ক থাকতে হবে। সরকার এবং সমস্ত সংস্থা, কী ঘটছে তা পর্যবেক্ষণ করছে। আমার মতে, প্রাথমিক সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। আমরা এখনই বর্ধিত সতর্কতার কথা বলছি না।