মঙ্গলবার , ২৬ আগস্ট ২০২৫ | ১৩ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অপরাধচিত্র বিশেষ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. খুলনা
  7. খেলাধুলা
  8. চট্রগ্রাম
  9. জাতীয়
  10. জেলার খবর
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. প্রবাসের কথা
  14. বরিশাল
  15. বিনোদন

এতদিনে বেরিয়ে এল থলের বিড়াল ফ্যাক্ট: বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি

প্রতিবেদক
Newsdesk
আগস্ট ২৬, ২০২৫ ২:২৮ অপরাহ্ণ

অপরাধচিত্র প্রতিবেদক : ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের পাঁয়তারা বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে চলছিল। সরেজমিন তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযোগের তীর সরাসরি স্বৈরাচারী মনোভাবাপন্ন, ফ্যাসিস্ট হিসেবে পরিচিত উপ-মহাসচিব সুলতান আহমেদ-এর দিকে।
বিগত সরকারের সময়ে তিনি অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই তিনি সোসাইটিতে ফ্যাসিস্টদের নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন, টেন্ডার বাণিজ্যসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হন। তৎকালীন কর্তৃপক্ষ তাকে দায়িত্ব প্রদান করে ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন এবং ফ্যাসিস্ট বিরোধীদের নির্মূলের জন্য। দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি ধারাবাহিকভাবে ফ্যাসিস্ট বিরোধীদের উপর নির্যাতন, বদলি, চাকরিচ্যুতি ও নানাবিধ হয়রানি শুরু করেন।
এর জ্বলন্ত প্রমাণ পাওয়া যায় ২০২৫ সালের ৫ মে অনুষ্ঠিত GRIP প্রকল্প-এর নিয়োগ পরীক্ষায়। ওই পরীক্ষায় নকল ধরা পড়লেও সুলতান আহমেদ ও তার সহযোগীরা এটিকে “প্রশ্নপত্র ফাঁস” বলে প্রচার করে, যা আমাকে জানানো হয় এবং আমি তা প্রচার করি। এরপর এই বিষয়টি বিভিন্নভাবে প্রচারিত হতে থাকলে আমার মনে সংশয় জাগে।
তদন্ত করে জানা যায়, নিয়োগবিধি অনুযায়ী সুলতান আহমেদ ছিলেন কমিটির আহ্বায়ক এবং আরও তিনজন ছিলেন সদস্য। প্রচলিত বিধি অনুযায়ী, কমিটির সদস্যরা খসড়া প্রশ্নপত্র আহ্বায়ককে জমা দেন এবং তিনি চূড়ান্ত করেন। কিন্তু ব্যতিক্রম দেখা যায়, কারণ পরীক্ষাটি নির্ধারিত সময়ের প্রায় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট দেরিতে শুরু হয়।
সেইদিন পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত থেকে সুলতান আহমেদ ও HR বিভাগের কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার এক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে নকল উদ্ধার করেন, এবং পরে তাকে বহিষ্কার করা হয় ও পরীক্ষাটি বাতিল ঘোষণা করা হয়। এরপর একজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি আমাকে ফোনে জানান যে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে এবং ফাঁসের সঙ্গে সোসাইটির ফ্যাসিস্ট-বিরোধী পরিচালক ইমাম জাফর সিকদার জড়িত।
কিন্তু বাস্তবে তদন্ত করে দেখা যায়, এটি ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। কারণ, ইমাম জাফর সিকদার কেবল কমিটির একজন সদস্য হিসেবে খসড়া প্রশ্নপত্র জমা দিয়েছিলেন। প্রশ্নপত্রের চূড়ান্তকরণ ও নিরাপত্তা ছিল আহ্বায়ক সুলতান আহমেদের দায়িত্বে। এ ছাড়া পরীক্ষা শুরুতে দেরি, এবং তদন্ত কমিটির রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ষড়যন্ত্রের নাটকটি সাজিয়েছিলেন সুলতান আহমেদ নিজেই।
এই ষড়যন্ত্রের লক্ষ্য ছিল ইমাম জাফর সিকদারকে দীর্ঘ ১৬ বছরের মত আবারো চাকরিচ্যুতি বা বদলির মাধ্যমে সরিয়ে দেওয়া। আওয়ামী লীগকে সোসাইটিতে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে তাকে হুমকি মনে করে এমন ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়, কিন্তু এই ষড়যন্ত্রে তাদের কোনো প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
সোসাইটির তৎকালীন চেয়ারম্যান এম ইউ কবির চৌধুরী নিজেই সুলতান আহমেদকে অভিযুক্ত করে বলেন যে, প্রশ্নপত্র নিয়ন্ত্রণ তার (সুলতানের) দায়িত্ব ছিল।
বর্তমান অস্থিরতার মূল কারণও অনেকেই মনে করেন সুলতান আহমেদ। এখনো তিনি বর্তমান চেয়ারমানের প্রশ্রয়ে ফ্যাসিস্ট-বিরোধীদের দমন করতে তৎপর। ইতোমধ্যে কয়েকজন চাকরিচ্যুত ব্যক্তিকে পুনর্বহাল করা হলেও, কেবলমাত্র একজন ফ্যাসিস্টকে সুযোগ দিয়ে অন্যদের বঞ্চিত রাখা হয়েছে- সুলতানের প্ররোচনায়।
সোসাইটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতামত অনুসারে, তারা সর্বসম্মতভাবে ইমাম জাফর সিকদারকে একজন দায়িত্বশীল ও ত্যাগী কর্মকর্তা হিসেবে মূল্যায়ন করেন এবং তার অবদান অকপটে স্বীকার করেন। অন্যদিকে ৫ আগস্টের পর সোসাইটির সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লিখিত অভিযোগ জানালেও সুলতান আহমেদকে এখনও অব্যাহতি দেওয়া হয়নি- এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এই অস্থিরতা নিরসনে আমার মত প্রকাশ করছি যে, সুলতান আহমেদ, পরিচালক শাহানা জাফর, কাজী আসাদ, চেয়ারম্যানের পিএস সোহাগ মিয়া, পরিচালক রেজাউল করিম – যাঁরা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য থেকেও দায়িত্বশীল পদে রয়েছেন, তাদের অবিলম্বে অপসারণ করা হোক।

সর্বশেষ - রাজনীতি