নিজস্ব প্রতিবেদক :
এবারই প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন প্রবাসীরা। এজন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত লাখ লাখ ভোটারের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৫৪ হাজার প্রবাসী ভোটার হতে আবেদন করেছেন।
সম্প্রতি প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানসংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের তৈরি করা প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসি কর্মকর্তা জানান, ১০টি দেশের ১৭টি স্টেশনের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৯০৯ জন প্রবাসী ভোটার হতে আবেদন করেছেন। যাদের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম শেষে ১৫ হাজার ৮৭৭ জন ভোটার হয়েছেন। অন্যদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
ইসি কর্মকর্তা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, মালদ্বীপ, জর্ডান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওমান, ফ্রান্স, স্পেন, বাহারাইন ও সিঙ্গাপুরে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি পেয়েছি। এগুলোতে দ্রুত কার্যক্রম শুরু করা গেলে ভোটার সংখ্যা আরও বাড়বে। ইতোমধ্যে আমেরিকারসহ কয়েকটি দেশে আমাদের টিম গিয়েছে এ কার্যক্রম শুরুর জন্য।
জানা যায়, নির্বাচন কমিশন ৪০টি দেশে কার্যক্রমটি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নিয়েছিল। যার মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মতিক্রমে বর্তমানে ১০টি দেশের (সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, ইতালি, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, কাতার, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও জাপান) ১৭টি স্টেশনে ইসির প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিবন্ধন ও ভোটার করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনশক্তি ব্যুরো, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি-বায়রাসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে দেখেছে ৪০টি দেশে বাংলাদেশি প্রবাসীদের আধিক্য রয়েছে। এসব দেশকেই মাথায় রেখে কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
দেশগুলো হলো— সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, কাতার, বাহরাইন, লেবানন, জর্ডান, লিবিয়া, সুদান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালি, হংকং, মিসর, ব্রুনাই, মৌরিশাস, ইরাক, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, গ্রিস, স্পেন, জার্মানি, দক্ষিণ আফ্রিকা, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, ব্রাজিল, চীন, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নিউজিল্যান্ড, রাশিয়া, তুরস্ক ও সাইপ্রাস। এসব দেশে এক কোটি ৪০ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩৪ জন প্রবাসী রয়েছে। সবচেয়ে রয়েছে বেশি ৪০ লাখ ৪৯ হাজার ৫৮৮ প্রবাসী রয়েছে সৌদি আরবে। আর সবচেয়ে কম দুই হাজার ৫০০ জন রয়েছে নিউজিল্যান্ডে।
ইসির তৈরি সবশেষ প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানসংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১০টি দেশ থেকে মোট আবেদন পড়েছে ৫৩ হাজার ৯০৯টি। যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়েছে চার হাজার ৬৭৫টি আবেদন। তদন্ত সম্পন্ন করে অনুমোদন হয়েছে এমন আবেদনের সংখ্যা ২৪ হাজার ৭০৫টি। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আঙুলের ছাপ ও ছবি নেওয়া হয়েছে ৩২ হাজার ৭০৭ জন প্রবাসীর। তদন্ত শেষে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে এমন আবেদনের সংখ্যা ৬৮০টি। উপজেলায় তদন্তে রয়েছে ২৩ হাজার ৮৪৫ জন প্রবাসীর আবেদন। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বাংলাদেশ দূতাবাসে তথ্য আপলোডের অপেক্ষায় রয়েছে ৭ হাজার ৮৮৫ জনের আর আপলোড করা হয়েছে ২১ হাজার ৮৮১ জন প্রবাসীর আবেদন।
সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০ হাজার ৯৩৮টি, সৌদি আরবে পড়েছে ৪ হাজার ৪৬১টি, ইতালিতে সাত হাজার ২৫০টি আবেদন, যুক্তরাজ্যে আবেদন করেছে ১০ হাজার ৮১৬ জন প্রবাসী, কুয়েতে ৪ হাজার ৪৫৪টি, কাতারে আবেদনের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৬০টি, মালয়েশিয়ায় এক হাজার ১৯৬ জন প্রবাসী আবেদন করেছেন। অস্ট্রেলিয়াতে আবেদনের সংখ্যা ৩৯২টি, কানাডায় ৮৮১টি আর সবচেয়ে কম আবেদন জাপানে ৭১টি।
এতে আরও বলা হয়েছে, প্রবাসী নিবন্ধিত ভোটের মধ্যে ১৫ হাজার ৮৭৭ জনের মধ্যে ১৩ হাজার ৯৯০ জনের এনআইডি প্রিন্ট করে পাঠানো হয়েছে, বাকিগুলোও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।