নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় রাষ্ট্রদ্রোহ ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা দুই মামলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ছয় কর্মকর্তার তিন দিন করে রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
তাদের মধ্যে মুন্সিগঞ্জের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার রাজন কুমার দাস, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নবীনগরের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া, কুমিল্লার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শ্রী দীপক কুমার সিংহ, মাগুরার শ্রীপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার রাহাত, নেত্রকোণার সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মনির হোসেনকে এক মামলায় এবং সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর বেলাল হোসেনকে অপর মামলায় রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
শুক্রবার তাদের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খিলক্ষেত থানার পরিদর্শক আশিকুর রহমান দেওয়ান ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চান। অন্যদিকে তাদের আইনজীবী রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরী রিমান্ড মঞ্জুরের আদেশ দেন।
দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সঙ্গে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের একীভূতকরণ এবং চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মীদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল সমিতিগুলো। দুই দফা দাবি বাস্তবায়নে ১২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বৃহস্পতিবার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ শুরু করে সমিতিগুলো।
বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয় পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন গ্রাহকদের। পরে সমিতিগুলোর অফিসে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যরা অনেক সমিতির অফিসের সামনে অবস্থান নেন।
পরে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমের অনুরোধে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত করে আন্দোলনকারীরা।
এদিকে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড খিলক্ষেত থানার পরিচালক প্রশাসন (আইন শাখার) আরশাদ হোসেন বৃহস্পতিবার খিলক্ষেত থানায় রাষ্ট্রদ্রোহ ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা দুটি দায়ের করেন। বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে আটক করা হয় ছয়জনকে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২৮ জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ‘কতিপয় বিপথগামী কর্মকর্তা-কর্মচারী’ একত্রিত হয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি পরিচয়ে জরুরিসেবা বিদ্যুৎ খাতকে ‘অস্থিতিশীল করার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রের সঙ্গে’ জড়িত হয়।
“তারা বিগত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালীদের মদদে নানান অযৌক্তিক দাবি দাওয়ায় ষড়যন্ত্র করে পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছেন। বিভিন্ন ধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম কাজে লিপ্ত আছেন। তাদের এ ধরনের কার্যকলাপ ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চরমভাবে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টার শামিল।
“তাদের এ সকল কর্মকাণ্ড বাংলাদেশ পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ডের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা, বোর্ডের কর্মকর্তাদদের সম্মানহানি এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অচল করে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতা তথা জনমনে ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করার মাধ্যমে সরকারকে চরমভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলা, যা দেশদ্রোহিতার শামিল।”