নিজস্ব প্রতিবেদক :
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম মাসে কমেছে মূল্যস্ফীতি। সাধারণ সূচকে আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতি কমে ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ হয়েছে যা গত মাসে ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মূল্যস্ফীতি সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
দেশে গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল জুলাই মাসে। সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে মূল্যস্ফীতিও লাফ দিয়ে কমে গেছে। এতদিন ধরে মূল্যস্ফীতির হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছিলেন অর্থনীতিবিদরা।
বিবিএসের হিসাব বলছে, আগস্ট মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতিও কমেছে। খাদ্যে মূল্যস্ফীতি জুলাইয়ে ছিল ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ, আগস্টে কমে হয়েছে ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এর আগে জুলাই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
গত ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই বিক্ষোভ পরে রূপ নেয় ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে। এতে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।
জুলাইয়ের একটি বড় সময় আন্দোলন এবং আন্দোলন প্রতিহত করতে দেশব্যাপী কারফিউ জারি করা হয়। এতে পণ্য সরবরাহ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, সেই মাসে আন্দোলন ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণেই মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পায়। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দেশের দায়িত্ব নেয়।
গত ২৫ আগস্ট মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতি সুদহার ৫০ পয়েন্ট বৃদ্ধি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে সুদহার ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে বেড়ে হয় ৯ শতাংশ। এর আগে গত ৮ মে পলিসি রেট ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছিল। সেই সময় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রেসক্রিপশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই হার বাড়ানো হয়েছিল।
এছাড়া স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) রেট ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) রেট একইভাবে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৭.৫০ শতাংশ করা হয়েছে। ২০২২ সালের মে থেকে পলিসি রেট বেশ কয়েকবার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যার ফলে সামগ্রিক সুদের হার বেড়েছে এবং ঋণ নেওয়া ব্যয়বহুল হয়েছে।