গাজীপুর প্রতিনিধি :
জেলার শ্রীপুর উপজেলাকে কাঁঠালের রাজধানী বলা হয়। কাঁঠাল পাকে মূলত বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে। চাষিদের আশা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি না হলে এবার কাঁঠালের বাম্পার ফলন হবে। শ্রীপুরের কাঁঠাল দেশের চাহিদা পূরণের পরেও বিদেশে রপ্তানি করা হয় প্রতিবছর।
এখন শ্রীপুরে গাছগুলোর গোড়া থেকে মগডালে শোভা পাচ্ছে কাঁঠাল। এ বছর উপজেলার প্রতিটি গাছের গোড়া থেকে মগডাল পর্যন্ত কাঁঠালে ভরে গেছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে কাঁঠাল পাকতে শুরু করবে পুরোদমে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা জুড়ে ও তার আশেপাশে সবখানে এখন কাঁঠাল গাছগুলোতে ঝুলন্ত কাঁঠালে ছেঁয়ে আছে। কোনো কোনো আগাম জাতের কাঁঠাল পাকতে শুরু করেছে। পাকা কাঁঠালের মিষ্টি গন্ধে কীট-পতঙ্গরা ভিড় করছে গাছে গাছে। এই উপজেলায় কাঁঠালের বাজারগুলোর মধ্যে অন্যতম জৈনার বাজার, বরমী বাজার, কাওরাইদ ও গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি ।
তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের সুজন মিয়া বলেন, তার ১৫টি কাঁঠাল গাছে সমানতালে কাঁঠাল ধরেছে। তিনি এবার ৩ লাখ টাকার কাঁঠাল বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে না পড়ায় কাঁঠালের ভালো ফলন হয়েছে।
শ্রীপুর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড কেওয়া এলাকার আনিছ মিয়া জানান, গাজীপুরের শ্রীপুরের কাঁঠাল দেশের চাহিদা পূরণের পরেও বিদেশে রপ্তানি করা হয় প্রতিবছর। তার বাড়ির আশেপাশে নিজের ১৪টি কাঁঠাল গাছ আছে। তার গাছে প্রচুর কাঁঠাল ধরেছে। এ বছর তার কাঁঠাল বিক্রির আশা ৪ থেকে সাড়ে ৫ লাখ টাকার।
এদিকে এখানকার অধিকাংশ কাঁঠাল গাছগুলো বাগানভিত্তিক না হলেও বাড়ির আঙিনায়, রাস্তার দুই ধারে। এসব গাছে ঝুলে থাকা কাঁঠলের দৃশ্য অনেকের নজর কাড়ে। অন্যান্য ফল ও গাছ নিয়ে সরকারি- বেসরকারি পর্যায়ে যত তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় কাঁঠাল নিয়ে তার সিকি ভাগও হয় না। কোনো কোনো পরিবার ফল মৌসুমে কাঁঠাল বিক্রি করে সারাবছরের আয় করে। দুই থেকে তিন মাস কাঁঠালের ভরা মৌসুম। এসময় পাইকার ও শ্রমিক শ্রেণির লোকদের বাড়তি আয়ের সুযোগ হয়। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কাঁঠালের ফলন ভালো হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, গাছে-গাছে কাঁঠলে ভরে গেছে। প্রতিটি গাছে ২০০ থেকে ৩০০টির বেশির পর্যন্ত ফল ধরেছে। তবে এ এলাকায় কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অত্র এলাকায় একটি কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত ব্যবস্থা গড়ে তুললে এ উপজেলার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।