নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ প্রেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অতিরিক্ত মুনাফা ও অপচয় বন্ধ হলে জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমানো সম্ভব বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি। প্রতিষ্ঠানটির এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে মতবিনিময়ে বিইআরসির গণশুনানিতে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণের তাগিদ দেন বিশেষজ্ঞরা।
বাজারে ডিজেল কেরোসিন প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়। অকটেন ১২৭ আর পেট্রোল ১৩১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিপিসি গতবছর প্রায় ৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা মুনাফা করে। এ বছরও তাদের মুনাফা হবে প্রায় ৪ হাজার কোটির ঘরে। কিন্তু কমছে না জ্বালানির দাম।
গত মার্চ থেকে প্রতিমাসে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। সিপিডির গবেষণা বলছে, আমদানি ও বিপণনের বিভিন্ন ধাপে অপচয় ও অতিরিক্ত মুনাফা করছে রাষ্ট্রায়ত্ত এ প্রতিষ্ঠান।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবছর সরকার এ খাতে ১৪ হাজার কোটি টাকা শুল্ককর আদায় করে। তারপরও তেল বিক্রিতে অতিরিক্ত মুনাফা অযৌক্তিক।
আইবিএফবির সভাপতি হুমায়ুন রশীদ বলেন, ‘আমদানি করা কোনো উপাদান ওনারা ব্যবহার করেন না। বিপিসি সেখান থেকে প্রচুর পয়সা লাভ করছে। জনগণের পয়সা। এই প্রাইসিংগুলো হওয়া উচিত বিইআরসির মাধ্যমে।’
ভোক্তাদের সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, ‘বিগত সরকার ব্যবসায়ীদের সরকার ছিল। তারা তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে গিয়ে নানা ধরনের পলিসি বা আইন তারা দরকার মনে করেছে। কিন্তু আজকের সরকারের তারই ধারাবাহিকতায় তেল, ডিজেল, পেট্রোল, কেরোসিনের মূল্য নিজের হাতে কেন রাখতে হবে?’ ০
অবশ্য বিপিসি চেয়ারম্যান আমিন উল আহসানের দাবি, বড় মজুদ সক্ষমতা না থাকায় জ্বালানি তেল আমদানিতে দর কষাকষির সুযোগ কম।
বিপিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা যদি তেলের দাম সঠিক রাখতে চাই, তাহলে কিন্তু আমাদের ওয়েস্টেজ কমাতে হবে বা বাংলায় যদি বলি চুরি কমাতে হবে। এর জন্য আসলে অটোমেশনের বিকল্প নেই।’
অন্যদিকে বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, ‘যে কোনো ইউটিলিটি বা অন্যায্য খরচ চাপিয়ে দেওয়া চেষ্টা করছে, এটা নিঃসন্দেহে ভোক্তা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে। বিইআরসি সকল পক্ষকে শুনেই কিন্তু এই প্রাইসিংটা ঠিক করবে।’
মতবিনিময়ে দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আলোচকরা। সেইসাথে গণশুনানিতে দাম নির্ধারনের তাগিদ দেন তারা।