ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম ও সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডরিনকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ডরিন জানিয়েছেন, কলকাতায় ডিএনএ টেস্ট করাতে যাওয়ার আগে এই হুমকি এলো।
মঙ্গলবার বেলা তিনটার পর এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানান আনার কন্যা ডরিন।
নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ডরিন জানান, সামাজিক মাধ্যম ইমোতে টেক্সট ম্যাসেজের মাধ্যমে এই হত্যা হুমকি দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে একটি আগ্নেয়াস্ত্রর ছবিও দেওয়া হয়েছে।
তিনি লেখেন, আজ ইমোতে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মেয়র আশরাফুল আলমকে হত্যার হুমকি দিয়েছে, সেই সঙ্গে আমাকেও।
ওই ম্যাসেজে লেখা ছিল, ‘কিরে আশরাফুল ভালো হলি না, আনারের মতো কি ডরিনের লাশতো কিমা কিমা করতে চাস। তুইও ভালো হয়ে যা, আর ডরিনকেও ভালো হয়ে যেতে ক, না হইলে দুজনের লাশ কিমা কিমা করে ফেলামু, বাদ যাবে না কিন্তু’।
ডরিন বলেন, এমন বার্তা দিয়ে তারা কী বোঝাতে চাচ্ছে। আমার বাবা হত্যার বিচার ও জড়িতদের ফাঁসি চাই। কোনো আসামি যেন বাংলার মাটি থেকে জামিন বা বের না হতে পারে।
রাষ্ট্র ও ডিবির হস্তক্ষেপ কামনা করে তিনি হত্যার হুমকি দাতাকে অবিলম্বে তদন্ত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। বলেন, যারাই হুমকি দিক বিচার ও শাস্তির দাবি থেকে এক পা পিছু হটবো না।
ডরিন বলেন, জেলা ও উপজেলাসহ যেখানে গোটা বিশ্বের মানুষ এই হত্যার ঘটনা শুনেছে। আসামিরা জেলহাজতে রয়েছে। দুই দেশে তদন্ত চলছে। আমিসহ পরিবার ডিএনএ টেস্ট করতে কলকাতা যাবো। এমন সময় হুমকি দিয়ে তারা আমাদের কী বোঝাতে চায় তারা। মোটেও আমাদের ভয় বা ভীতি বা হারানোর কিছু নেই। সাহস থাকলে বাবার কাছে পাঠিয়ে দিন। তবে দেশের সরকার ও দল এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ঠিকই খুজে পাবে আপনি কে বা কোন নেতার অনুসারি।
গত ১৩ মে কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনে এমপি আনারকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামান শাহীনের নির্দেশেই এই হত্যা হয়েছে বলে জানা গেছে।
খুনের পর সেই লাশের টুকরোগুলোকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার ভাঙ্গড় ব্লকের কৃষ্ণমাটি খাল এলাকায় ফেলা হয়। পরে ওই খাল সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু হাড় উদ্ধার করে সিআইডির কর্মকর্তারা। যা দেখে সিআইডি কর্মকর্তা ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান সেগুলি মানুষের হাড়।
পাশাপাশি সঞ্জীবা গার্ডেনের ওই আবাসনের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয় প্রায় চার কেজি মাংস। উদ্ধার ওই মাংস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী ওই মাংসের টুকরোগুলো পুরুষ মানুষের। সিআইডির সূত্র বলছে, তবে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত রিপোর্ট আসেনি।
সূত্রটি বলছে, মাংসের টুকরো গুলো এমপি আনারের কি না তা জানতে এবার ডিএনএ পরীক্ষা করবে তদন্তকারী কর্মকর্তারা। সেজন্য আনারের কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডোরিন কলকাতায় আসতে পারেন।
অপরদিকে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের দায়ে করা মামলার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আট আগস্ট দিন ধার্য করছে ঢাকার সিএমএম আদালত।
গত ১২ মে সন্ধ্যায় আনোয়ারুল আজিমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন।