নিজস্ব প্রতিবেদক :
৮৬ কিলোমিটার পাড়ি নিয়ে সুন্দরবনে পর্যটনবাহী জাহাজে ৬ মাস বয়সি এক অসুস্থ শিশুকে চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে সুস্থ করেছে কোস্ট গার্ডের চিকিৎসক টিম। গত ৭ নভেম্বর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সুন্দরবনের কটকা এলাকা থেকে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ চিকিৎসক টিমে ৭ চিকিৎসক ছিলেন। কোস্টা গার্ডের এমন উদ্যোগে নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে শিশুটি।
কোস্ট গার্ড সদর দপ্তর জানিয়েছে, গত ৭ নভেম্বর ৫০ জনের একটি পর্যটক দল নিয়ে এমভি উৎসব নামের জাহাজটি সুন্দরবন ভ্রমণে বের হয়। ওইদিন রাতে সুন্দরবনের সংরক্ষিত অঞ্চল কটকায় পৌঁছাতেই ঘুরতে যাওয়া এক দম্পতির ৬ মাসের শিশু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যায়। জাহাজে কোনো চিকিৎসক টিম ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে শিশুটিকে নিয়ে তার বাবা মা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েন। জাহাজটি মোংলা ঘাট থেকে ৮৬ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল চরম কঠিন। ওই জাহাজে থাকা সামরিক বাহিনীর একজন সাবেক কর্মকর্তা বিষয়টি কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরকে অবগত করেন।
সদর দপ্তর জানিয়েছে, টেলিটক মোবাইল নেটওয়ার্ক ছাড়া সুন্দরবন এলাকায় সাধারণ যোগাযোগ করা সম্ভব হয় না। কোস্ট গার্ড সদর দপ্তর খবর পেয়ে বিষয়টি কোস্ট গার্ডের পশ্চিম জোন কমান্ডারকে অবগত করে। জোন কমান্ডারের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের চিকিৎসক টিম ৮৬ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে পর্যটনবাহী জাহাজটির কাছে যায়। পরে তাৎক্ষণিক অসুস্থ শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
কোস্ট গার্ড আরও জানায়, ওই শিশুটিকে রাতেই কোস্ট গার্ডের ব্যবস্থাপনায় স্পিডবোডে করে প্রথমে মোংলায় নিয়ে আসা হয়। এরপর অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনায় বিশেষায়িত হাসপাতালে প্রেরণ করে শিশুটির সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়। কোস্ট গার্ড সময় মতো না পৌঁছালে শিশুটিকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হতো না। হয়তো বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো।
কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের কর্মকর্তা লে. কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি জানান, ট্যুরিস্ট সিজনে সাধারণত এ ধরনের জাহাজগুলো সমুদ্রের কাছাকাছি সুন্দরবনের গহিন এলাকায় যায়। এলাকাগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্গম এবং জরুরি চিকিৎসাসেবা দেওয়া অত্যন্ত দুরূহ বিষয়। এ কারণে ট্যুরিস্ট জাহাজগুলো ভ্রমণের আগে একজন চিকিৎসক বা প্যারামেডিকসহ যাত্রা করলে এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা এড়ানো সম্ভব।