নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) পদক পেয়েছেন খালে ঝাঁপ দিয়ে আসামী গ্রেফতার করা সেই আলোচিত মির্জাগঞ্জ থানার এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ এনামুল হক।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ অনুষ্ঠানে তাকে এ পদক তুলে দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মোঃ এনামুল হককে এ পদক প্রদান করা হয়েছে গত বছরের ৬ অক্টোবর কচুরিপানায় ভর্তি খালের ঝাঁপ দিয়ে তিন ঘণ্টার অভিযান চালিয়ে শিশুধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেফতার ও নানা মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ আচরণের মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীতে তার অবদানের জন্য।
এই বছর চারটি বিভাগে পদক প্রদান করা হয়। ১৫ জন পুলিশ সদস্য বীরত্বের জন্য বিপিএম পদক পেয়েছেন এবং ১৩ জনকে সেবার জন্য বিপিএম পদক প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও, ১৩ জন কর্মীকে সাহসিকতার জন্য পিপিএম পদক প্রদান করা হয়েছে এবং ২১ জন তাদের বিশেষ সেবার জন্য পিপিএম পদক পেয়েছেন। বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক (পিপিএম) হল বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যদের জন্য প্রদত্ত সর্বোচ্চ সম্মাননা।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশুধর্ষণ মামলার এক আসামীকে গ্রেফতার করেন। সেই ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর প্রশংসায় ভাসেন এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ এনামুল হক ।
এ ঘটনার পর এসআই মো. এনামুল হক গণমাধ্যমে বলেন, ‘আসামি বেলাল দূর থেকে আমাদের চিনতে পেরে খালে ঝাঁপ দিয়ে কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে পড়ে। সে খুব চালাক প্রকৃতির লোক। তাকে কচুরিপানার মধ্যে থেকে ধরতে প্রায় তিন ঘণ্টা লেগে গেছে।’
গত ২৭ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে পুলিশে ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক-পিপিএম’র জন্য মনোনীত হিসেবে পুলিশের এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ এনামুল হকের নাম ঘোষণা করা হয়। তিনি বর্তমানে ঢাকার এন্টি টেররিজম ইউনিটে কর্মরত । চাকরি জীবনে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স (আইজিপি) টিমে কর্মরত থেকে বাংলাদেশ পুলিশ ও জাতীয় অ্যাথলেটিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে স্বর্ণপদক, রোপ্য পদক ও ব্রোঞ্চ পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন।
এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ এনামুল হক ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পুলিশ ১ এপিবিএন, উত্তরা, ঢাকায় যোগদান করেন। পরে ২০১৭-২০২৩ পর্যন্ত থেকে স্পেশাল ব্রাঞ্চ(এসবি), ঢাকা। এর পর ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মির্জাগঞ্জ থানা কর্মরত ছিলেন ।
এনামুল হক মাদারীপুর জেলার আব্দুর রশিদ তালুকদার (অবঃ প্রধান শিক্ষক) ছেলে । ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ইশরাত জাহান এশা এর সহিত বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ এবং আকসা মারিয়াম (৪) নামে এক কন্যা সন্তানের জনক।