নিজস্ব প্রতিবেদক :
১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদ মর্যাদা দেওয়া ও আহতদের যথাযথ সম্মান নিশ্চিত করার পাশাপাশি ৯০-এর ছাত্র আন্দোলনকে জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্তি এবং স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছে ‘অপরাজেয় ৯০’ সংগঠন।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র-জনতার সফল অভ্যুত্থানের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত ‘অপরাজেয় ৯০’ সংগঠনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংগঠনের আহ্বায়ক আলী আক্কাস নাদিম বলেন, বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির ইতিহাস গৌরবময় ও উজ্জ্বল। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং ২০২৪ সালের গণআন্দোলনসহ প্রতিটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে ছাত্রসমাজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। সাধারণ ছাত্ররাই সর্বপ্রথম ভাষার দাবি উত্থাপন করেন এবং এর পক্ষে আন্দোলন গড়ে তোলেন। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান- সব ক্ষেত্রেই ছাত্রদের ভূমিকা উজ্জ্বল ও অনন্য। তাই ৯০-এর ছাত্র আন্দোলনের অবদানও সমানভাবে স্বীকৃতি পেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারব্যবস্থা বাতিল করে বিচার বিভাগের মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেন এবং একনায়কতান্ত্রিক শাসন কায়েম করেন, যা পরে জনগণের কাছে ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থা হিসেবে স্বীকৃত হয়। দীর্ঘ ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো আন্দোলন করেছে। অবশেষে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার রক্তদানের মধ্য দিয়ে ৩৬ জুলাই তথা ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন, যা বাংলাদেশের মানুষের কাছে ‘লাল জুলাই’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
সংগঠনের সদস্য সচিব মো. জাকির হোসেন বলেন, নব্বইয়ের চেতনাকে ধারণ করে আমরা একত্রিত হয়েছি। এদেশের মানুষ মানবিক; পূর্বপুরুষদের ভুলতে না পারার মতোই আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও একটি অমানবিক রাষ্ট্র চাই না। সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মানবিক চেতনা থেকেই এ সংগঠন গড়ে উঠেছে। এই সংগঠনের মাধ্যমে সারাদেশে ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহতদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। আমাদের সবার দাবি- জুলাই সনদে ৯০-এর ছাত্র আন্দোলনকে সমানভাবে অন্তর্ভুক্ত ও স্বীকৃতি দিতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন নয়ন, লুৎফর রহমান, জাবের আব্দুল্লাহ খান, সদস্য নুরুল ইসলাম লেলিন, ঢাকা কলেজের সাবেক জিএস (১৯৯০) জাবেদসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা।