গাজীপুর প্রতিনিধি :
গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ২০৩ আসামির মধ্যে গত আড়াই মাসে মাত্র ২৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এখনও ১৭৭ জন পলাতক রয়েছে। এ সকল দুর্ধর্ষ আসামিরা গ্রেপ্তার না হলে ফের বড় ধরনের অপরাধ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সর্বশেষে গত রোববার (২০ অক্টোবর) রাতে র্যাবের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ঢাকার পল্লবী ওয়াপদা বিল্ডিং এলাকা থেকে এ শমসেরকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে। তিনি হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৬ আগস্ট সহিংসতা করে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে ২০৩ জন বন্দি পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার সময় কারারক্ষীদের গুলিতে ৬ কয়েদি নিহত। ওই ঘটনায় ১৫ আগস্ট জেলার মোহাম্মদ লুৎফর রহমান বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার এজাহার ও কারাকর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ আগস্ট কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা বন্দিরা দাঙ্গা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বিশৃঙ্খলা ও দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে প্রথমে সতর্ক করা হয়। পরে বন্দিরা হামলা করে ২৫-৩০ জন কারারক্ষীকে গুরুতর আহত করে। এক পর্যায়ে তারা কারাগারের দেয়াল ভেঙে ফেলে এবং বিদ্যুতের পোল উপড়ে ফেলে মই বানিয়ে কারাগারের দেয়াল টপকে ২০৩ জন পালিয়ে যায়। সেই সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গুলি চালালে ৬ জন বন্দি নিহত হয়। ওই সময়ে কারাগারের বন্দিদের হামলায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে কারাকর্তৃপক্ষ উল্লেখ করেছে।
এ ঘটনায় থানায় মামলা হলেও দেশের পরিস্থিতির কারণে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জোরদার অভিযান পরিচালনা করতে পারেনি। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে গত দেড় মাসে অভিযান চালিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করে।
গাজীপুর ঘনবসতিপূর্ণ ও শিল্প কারখানা সমৃদ্ধ এলাকা। এখানে শত শত বস্তি ও কলোনি রয়েছে। কারাগার থেকে পালানো এ সকল দুর্ধর্ষ ও সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা এ সব এলাকায় লুকিয়ে থেকে নতুন করে অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে পারে।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘‘আমরা এখন পর্যন্ত ২৬ জনকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। সর্বশেষ যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এখনও আমরা তাকে পাইনি। গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকেও কারাগারে পাঠানো হবে।’
কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্নভাবে তথ্য নিয়ে অভিযান কাযক্রম অব্যাহত রয়েছে। অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও বিষয়টি আমলে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।