রাজশাহী প্রতিনিধি :
রাজশাহীতে ছাত্র আন্দোলনে দুই হাতে জোড়া পিস্তল নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করা শীর্ষ সন্ত্রাসী জহিরুল হক রুবেলের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ রোববার রাজশাহীর মেট্টোপলিটন আদালত-১-এর বিচারক ফয়সাল তারেক এ আদেশ দেন।
শুক্রবার রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রুবেল রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দুই শিক্ষার্থী হত্যা মামলার আসামি। তিনি নগরীর চণ্ডীপুর এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। গত ৫ আগস্ট ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রুবেল দুই হাতে দুটি পিস্তল নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছুড়ছে।
গত ৫ আগস্ট রুবেলের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অন্তত অর্ধশত নেতাকর্মী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছোড়েন। এ ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। অনেকেই আহত হন। রুবেল আগে থেকেই একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনেও মামলা রয়েছে।
র্যাব-৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফিরোজ কবির জানিয়েছেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে, রুবেল কক্সবাজার থেকে কুমিল্লা হয়ে ঢাকার দিকে আসছেন। পরে র্যাব-১০ যাত্রাবাড়ী ও র্যাব-৫ যৌথ অভিযান চালিয়ে কুমিল্লার দাউদকান্দি ব্রিজের ওপর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল শিক্ষার্থী আলী রায়হান ও সাকিব আনজুম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ বলেন, রুবেলকে শনিবার রাতে রাজশাহীতে আনা হয়। রোববার তার ১০দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রাজশাহীতে ছাত্র আন্দোলনে নিহত আলী রায়হান ও সাকিব আনজুম হত্যা মামলার আসামি রুবেল।
নিজ এলাকা ছাড়াও নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় রুবেলের দুর্ধর্ষ ক্যাডার বাহিনী ও শক্তিশালী মাদক সিন্ডিকেট রয়েছে। এই ক্যাডার বাহিনীর মাধ্যমেই জমি দখল, মাদক, জুয়া, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। হাফ ডজন মামলার আসামি হয়েও ২০২৩ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হলফনামায় তথ্য গোপন করে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি।
সর্বশেষ গত ৫ অক্টোবর হাসিনা সরকারের পতনের দিন শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে একটি শক্তিশালী শুটার বাহিনী গুলিবর্ষণ করে। ওই শুটার বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন রুবেল। এসব অপকর্ম করে রুবেল শতশত কোটি টাকার মালিক হয়েছিলেন।