কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় পদ্মা নদীতে নিখোঁজ আরও এক পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মুকুল হোসেনের (৩৭) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে পাবনার সুজানগরে পদ্মা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতকারীরা নৌকাটি ডুবিয়ে দিলে দুই পুলিশ সদস্য নিখোঁজ হন।
সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কুঠিবাড়ি ঘাট এলাকা থেকে এএসআই সদরুল হাসানের (৪৪) মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
সুজানগর থানার ওসি বলেন, ‘বুধবার সকাল ৭টার দিকে খবর পাই, সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট এলাকার পদ্মা নদীতে নিখোঁজ পুলিশের এএসআই মুকুলের মরদেহ ভেসে উঠেছে। পরে নৌপুলিশ এবং সেখানকার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র এএসআই মুকুল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে।’
এদিকে, কুষ্টিয়ার কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার এসএম ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘পদ্মা নদীতে নিখোঁজ পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মুকুল হোসেনের মরদেহ পাবনা এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে। নৌপুলিশ এবং পাবনা পুলিশসহ কুমারখালী থানা পুলিশ মিলে তার মরদেহ উদ্ধার করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বুধবার সকাল ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তখন কুমারখালীর ওসি ফোন করে জানান, মরদেহ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে এএসআই মুকুল হোসেনের মরদেহ ভেসে উঠেছে। এ জন্য উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেছি।’
এ বিষয়ে কুমারখালী থানা পুলিশের ওসি নজরুল ইসলামের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ধরেননি।
উল্লেখ্য, সোমবার (২৮ অক্টোবর) ভোর ৪টার দিকে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গিয়ে পদ্মা নদীতে দুর্বৃত্তের হামলায় নিখোঁজ হন কুমারখালী থানা পুলিশের দুই এএসআই। উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কুঠিবাড়ি ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তের হামলায় আহত হন আরও তিন জন। তারা হলেন– কুমারখালী থানা পুলিশের একজন কর্মকর্তা, স্থানীয় কয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সানোয়ার হোসেন এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনোয়ার হোসেন। তাদের মধ্যে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কুঠিবাড়ি ঘাট এলাকা থেকে সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সদরুল হাসানের (৪৪) মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। সবশেষে পাবনার নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট এলাকার পদ্মা নদী থেকে এএসআই মুকুল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হলো।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুমারখালী উপজেলার পদ্মা নদীর ওপারে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের ছয় জন সদস্য নৌকায় করে যাচ্ছিলেন। সেখানকার লোকজনের সঙ্গে রবিবার দুর্বৃত্তদের গণ্ডগোল হয়েছিল নদীতে। পুলিশ বহন করা নৌকা দেখে তারা প্রতিপক্ষের লোকজন আসছে ভেবে হঠাৎ এসে পুলিশের নৌকা ডুবিয়ে দেয়। নৌকাতে ছয় জন পুলিশ সদস্য ছিলেন। তাদের মধ্যে চার জন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও নিখোঁজ হন পুলিশ কর্মকর্তা সদরুল এবং মুকুল।