বরিশাল প্রতিনিধি :
বরিশালের মুলাদী উপজেলায় রুবেল শাহ (৩৮) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। আজ বুধবার (৩ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের টুমচর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত রুবেল শাহ সেকান্দার শাহের ছেলে এবং বাটামারা ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য নার্গিস বেগমের স্বামী। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী না থাকায় জাতীয় পার্টির (জাপা) কর্মীর হয়ে কাজ করছিলেন।
মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকারিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে ওই ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নিরাপত্তা জোরদার করে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো থানায় মামলা হয়নি। হত্যায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।
ওসি এই হত্যাকাণ্ডকে নির্বাচনি সহিংসতা বলে মনে করেন না। নিহত রুবেল শাহর স্ত্রী নার্গিস বেগম বলেন, রুবেল নরসিংদী জেলায় বিরিয়ানির ব্যবসা করতেন। সংসদ নির্বাচনে জাপার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে তিন দিন আগে বাড়িতে আসেন। আজ সকালে বাড়ি থেকে জাগরনী বাজারে যাওয়ার পথে মোকছেদ আকনের বাড়ির সামনে পৌঁছালে লোকমান হোসেন, মুরাদ হোসেন ফারুক, রফিক সরদার, আব্বাস ব্যাপারী, মনির সরদার, আ. রাজ্জাক, দুলাল হাওলাদারসহ ৩০ থেকে ৩৫ জন লোক রামদা, চাপাতি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা রুবেলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে চলে যায়। সংবাদ পেয়ে বাড়ির লোকজন গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে বরিশাল হাসপাতালে নেওয়ার পথে খাসেরহাট এলাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।
উপজেলা চেয়ারম্যান তারিকুল হাসান খান মিঠু জানান, নিহত রুবেল শাহ আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী। তিনি বাটামারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এর আগে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় একটি পক্ষের হয়ে কাজ করা এবং বর্তমানে জাপার পক্ষে কাজ করছিলেন।
বাটামারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দীন অশ্রু বলেন, রুবেল লাঙল প্রতীকের পক্ষে কাজ করছিলেন। তবে নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা নিয়ে খুনের ঘটনা ঘটেছে কি না বুঝতে পারছি না।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, টুমচর ইউনিয়নের বাটামারায় হাজি ও আকন গ্রুপের মধ্যে প্রায় ২৩ বছর ধরে বিরোধ চলছিল। বরিশাল জেলা পুলিশের মধ্যস্থতায় গত বছরের ২২ জুলাই ওই দুই পক্ষের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি হয়েছে। কিন্তু সেই চুক্তির শর্তভেঙে পাঁচ মাস ১১ দিনের ব্যবধানে আবারও হত্যার ঘটনা ঘটল। হত্যায় অভিযুক্তরা আকন গ্রুপের সদস্য বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।