ঝালকাঠি প্রতিনিধি :
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় সাপের কামড়ে মো. সেলিম আকন (৬০) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৯ জুন) সকালে উপজেলার তালতলা বাজারের দোকানে তাকে সাপ কামড় দেয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আমুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে অ্যান্টিভেনম থাকা সত্ত্বেও তা না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। চিকিৎসকের অবহেলায় সেলিমের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা।
নিহতের পরিবার জানায়, আজ শনিবার সকালে উপজেলার তালতলা বাজারের সেলিম আকনের মুদি দোকানে ঢুকে পড়ে একটি বিষধর সাপ। সাপটি তাঁর হাতে কামড় দেয়। এ সময় সেলিম নিজেই উপস্থিত লোকজনকে তাকে সাপে কামড় দিয়েছে বলে জানান। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলার আমুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
স্বজনদের অভিযোগ, কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, তাদের কাছে অ্যান্টিভেনম রাখার স্টোররুমের চাবি নেই, তাই তারা চিকিৎসা দিতে পারছেন না। ঘণ্টাখানেক পর রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পথে সেলিমের মৃত্যু হয়। মৃত সেলিম আকন উপজেলার পূর্ব বাঁশবুনিয়া গ্রামের আব্দুস সত্তার আকনের ছেলে।তিনি তালতলা বাজারে মুদি দোকানের ব্যবসা করতেন।
নিহত সেলিমের ভাইয়ের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন জসিম অভিযোগ করেন, সাপে কামড় দেওয়ার পর আমরা চাচাকে নিয়ে আমুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। তখন তাঁরা চাচাকে টেবিলের ওপর ফেলে রেখেছিল। আমরা জিজ্ঞেস করলে চিকিৎসকরা বলেন, রক্ত পরীক্ষা হচ্ছে, আপনারা অপেক্ষা করুন। কিছুক্ষণ পর চিকিৎসকরা বলেন, বিষাক্ত সাপে কেটেছে, এখানে কোনো চিকিৎসা হবে না।আপনারা রোগীকে বরিশাল নিয়ে যান।
আমরা অ্যাম্বুল্যান্সে বরিশাল যাওয়ার পথে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ফোন করে ফিরে আসতে বলে। আমরা আবারও ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। চিকিৎসকরা তখন জানান, দশটি ইনজেকশন একসঙ্গে পুশ করতে হবে, আমাদের কাছে আছে আটটি। স্টোরের চাবি নাই, তাই আমরা ভ্যাকসিন পুশ করতে পারছি না। তখন উপায়ান্তর না পেয়ে আবার বরিশালের উদ্দেশে রওনা হলে পথেই চাচা মারা যান। চিকিৎসকদের অবহেলা এবং সময় নষ্ট করার জন্য আমার চাচা মারা গেছেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তাপস কুমার বলেন, ‘সাপে কামড়ানো রোগীকে ভ্যাকসিন পুশ করার জন্য রোগীর নিকটতম স্বজনের নিদাবিপত্রে স্বাক্ষর করার বিধান রয়েছে। সেলিমের পক্ষে কেউ স্বাক্ষর না করায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে অ্যান্টিভেনম পুশ করতে পারেননি। স্বজনরাই আগ্রহী হয়ে তাকে বরিশাল নিয়ে গেছেন।’