সিলেট প্রতিনিধি :
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা মামলায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৭ জনের যাবজ্জীবন ও ১৭ জনের দুই বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের (ভারপ্রাপ্ত) বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহীন এ আদেশ দেন।
পাবলিক প্রসিকিউটর আশিক উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রায় ঘোষণাকালে একজন ছাড়া সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের চৈতননগর গ্রামের যুক্তরাজ্যপ্রবাসী সাইফুল ইসলাম, তার ভাই নজরুল ইসলাম ও সদরুল ইসলাম, একই গ্রামের সিরাজ উদ্দীন, জামাল আহমদ, নোয়াগাঁও গ্রামের শাহিন আহমদ, ঘাগুটিয়া গ্রামের আব্দুল জলিল ও পশ্চিম গড়গড়ি গ্রামের আনোয়ার হোসেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চৈতন নগরের ইলিয়াস হোসেন, আব্দুন নুর, জয়নাল হোসেন, আশিক হোসেন, আছকির আলী, ফরিদ আহমদ ও আকবার আলী। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
২ বছর করে দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- লুৎফুর, ময়ূর, মানুনুর রশিদ (পলাতক), কাওছার, দিলাফর, পারভেজ, ওয়াহিদ, দিলোয়ার, আজাদ, মুক্তার, রকিব, আঙ্গুর, জাবেদ, শফিক, মখলিছ, ফিরোজ ও ফখর উদ্দিন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বনাথ উপজেলার চাউলধনী হাওর ভুয়া মৎস্যজীবী সমিতির নামে ইজারা নিয়ে প্রবাসী সাইফুল ও তার লোকজন ভোগদখল করে আসছিলেন। ইজারার আওতাধীন এলাকার ৩০টি গ্রামের কৃষকদের জমিসহ খাল, নালা, ডুবা দখলে নেন তারা। এ নিয়ে এলাকার কৃষকরা ইজারা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করেন। ২০২১ সালের ১ মে ভুয়া ইজারাদাররা মালিকানাধীন জমি থেকে মাটি কাটতে শুরু করেন। এতে বাধা দেন জমির মালিক চৈতননগর গ্রামের ইব্রাহিম আলী সিজিলসহ তাদের স্বজনরা। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। একপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভুয়া ইজারাদাররা হামলা ও গুলি চালালে স্থানীয় শাহজালাল হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র সুমেল নিহত হয়। গুলিবিদ্ধ হন তার বাবা ও চাচাসহ ৩ জন।
এ ঘটনার সুমেলের চাচা ইব্রাহিম আলী সিজিল বাদী হয়ে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজনকে আসামি করে বিশ্বনাথ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলার পর আলামত নষ্ট ও আসামিপক্ষকে মদদের অভিযোগে তৎকালীন ওসি শামিম মুসা, এসআই নুর ও ফজলুল হককে প্রত্যাহার করা হয়। তদন্ত শেষে বিশ্বনাথ থানার তৎকালীন পরিদর্শক রমা প্রসাদ চক্রবর্তী ৩২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। যুক্তিতর্ক শেষে আজ রায় প্রদান করেন আদালত।