নোয়াখালী প্রতিনিধি :
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের দিন ৩০ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় ১০ জনের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টায় নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস এ রায় দেন।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি মামলাটির রায় ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু রায় লেখার কাজ শেষ না হওয়ায় তারিখ পিছিয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি পুনঃনির্ধারণ করা হয়।
আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. শামছুদ্দিন বলেন, আলোচিত এ মামলার রায় উপলক্ষে আদালত প্রাঙ্গণে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আগেই সংশ্লিষ্ট সকলকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামিদের কারাগার থেকে কোর্ট হাজতে আনা হয়েছে।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী ও সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে (৪০) মারধর ও দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। নির্যাতিত নারীর অভিযোগ, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেয়ার জেরে ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি তখন দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।
ঘটনার পরদিন (৩১ ডিসেম্বর) নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেন।
আদালতে বাদীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা বারের সাবেক সভাপতি মোল্লা হাবিবুর রছুল মামুন বলেন, সুবর্ণচরে নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের সেই আলোচিত ঘটনায় কারাগারে রয়েছেন ১৫ জন আসামি। তাদের মধ্যে আটজন আসামি নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রায়ের দিন পিছিয়ে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) নির্ধারণ করা হয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছালেহ আহম্মদ সোহেল খান বলেন, এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করে। মামলায় রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। ১৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মো. মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮) নামে একজন আসামি ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। আজ এ মামলায় আদালত ১০ জনের ফাঁসির রায় দিয়েছেন।