কক্সবাজার প্রতিনিধি :
মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষে আতঙ্কে আছেন সীমান্তবাসী। ওপারের বিস্ফোরণ-গুলির শব্দে প্রকম্পিত বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের কিছু গ্রাম। এ পরিস্থিতিতে আতঙ্কে সীমান্ত এলাকায় চাষ ও মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছেন বাসিন্দারা।
২০২২ সালে বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চলে, বিদ্রোহীদের সঙ্গে তীব্র সংঘাত হয় মিয়ানমার সেনাদের। সেসময় বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘনের পাশাপাশি, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির গ্রামে গোলা এসে পড়ার ঘটনাও ঘটে।
এখনকার পরিস্থিতিও আগের মতোই। বিশেষ করে টেকনাফের কেরনতলী এলাকার মানুষ এই বাস্তবতার শিকার। প্রতিদিন ওপার থেকে আসে বিস্ফোরণ আর গোলাগুলির শব্দ।
মিয়ানমারের সাথে নাইক্ষ্যংছড়ি এবং কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের সীমান্ত রয়েছে। যেখানে সীমান্ত ঘেষা জমিতে চাষ আর নাফ নদীর খালে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছেন স্থানীয়রা। গেল কয়েকদিনে তমব্রু, কোনাপাড়া আর পশ্চিমকুল এলাকায় তিনটি মর্টার শেল পড়ার ঘটনাও ঘটেছে। যা ভয় বাড়িয়েছে বাসিন্দাদের।
মিয়ানমারে সংঘর্ষে ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তে আতঙ্ক, পরিদর্শনে ডিসি–এসপিমিয়ানমারে সংঘর্ষে ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তে আতঙ্ক, পরিদর্শনে ডিসি–এসপি
টেকনাফের এক বাসিন্দা বলেন, ‘এখানে তো প্রায়ই হয় যে গোলাগুলির শব্দ আমরা শুনতে পাই। গতকাল রাত থেকে শুনছি শব্দ অনেক ভিন্ন। সংঘর্ষের সময় যে গোলা পড়ছে, তা আমাদের উপরও এসে পড়তে পারে। আমরা সেই ভয়ে আছি।’
আতঙ্ক কমাতে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ এবং টহল বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে কোস্টগার্ড। তবে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, দ্রুত মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ জরুরি।
কোস্টগার্ডের টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লে. কমান্ডার এইচ এম লুৎফুল লাহিল মাজিদ বলেন, ‘আমাদের টহল সর্বদা দিনে ও রাতে চলছে। আমরা সাইরেন বাজিয়ে বা বিভিন্নভাবে জানান দিচ্ছি। নিয়মিত টহলটা আমরা পরিচালনা করছি।’
কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী বলেন, ‘জনগনের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য আমার মনে হয় সরকারের একটি তীব্র শো ডাউন করা উচিত। না হলে মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলবে।’
বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের ২৭১ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। ওপারে যার পুরোটাই এখন বিদ্রোহীদের দখলে। সীমান্তবর্তী মানুষের নিরাপত্তা জোরদার, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোর পাশাপাশি টেকনাফ সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজগুলোর নিরাপত্তা নিয়েও ভাবতে হচ্ছে আলাদা করে।