নিজস্ব প্রতিবেদক :
পর্দা নেমেছে ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা ২০২৪ এর। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ বছরের মতো সাঙ্গ হলো মেলার আয়োজন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এ সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ক্রেতা সংকটে লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে বাণিজ্যমেলার সময়সীমা বাড়ানোর জন্য বেশ কিছুদিন ধরে ব্যবসায়ীরা দাবি জানিয়ে এলেও হিসাব শেষে দেখা গেছে, গত বছরের তুলনায় এবারের আয়োজনে লাভ হয়েছে বেশ ভালোই।
সমাপনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৩৫ দশমিক ৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ ৩৯১ দশমিক ৮২ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশ পাওয়া গেছে এবারের বাণিজ্যমেলায়। গত বছরের তুলনায় যা ১৭ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি।
এবারের মেলায় পণ্য বেচাকেনাও হয়েছে গতবারের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। আনুমানিক প্রায় ৪০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে এ বছরের আয়োজনে।
উল্লেখ্য, দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ থেকে এই ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা আয়োজিত হয়ে আসছে। স্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে এ বছর কিছুটা বিলম্বে শুরু হয় বাণিজ্যমেলা। ২১ জানুয়ারি মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিডিউল অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার ছিল আয়োজনের শেষদিন।
মেলার শেষ দিনে বিভিন্ন স্টল-প্যাভিলিয়নে বিভিন্ন অফার চললেও ক্রেতাদের চাপ তুলনামূলক অনেক কম লক্ষ্য করা গেছে। ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা ছিল, শেষ দিনে সকাল থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় থাকবে। তবে তার বিপরীত চিত্র লক্ষ করা গেছে মেলা প্রাঙ্গণে। ক্রেতাদের চাপ কম থাকায় অধিকাংশ ব্যবসায়ীকে অলস সময় পার করতে দেখা গেছে।
মেলার শেষদিন উপলক্ষে বিকেলে আয়োজিত হয় সমাপনী অনুষ্ঠান। সেখানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।
ইপিবি’র (রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো) পক্ষ থেকে জানানো হয়, মেলায় এবার মোট ৩০৪টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ ছাড়াও ৫টি দেশের ৯টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয় এবারের বাণিজ্যমেলায়। দেশগুলো হলো- ভারত, হংকং, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুর।
এবারের বাণিজ্যমেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ ও স্টলের মোট সংখ্যা ছিল ৩৫১টি; যা বিগত বছরে ছিল ৩৩১টি। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এক্সিবিশন সেন্টারের ১ লাখ ৬৬ হাজার ৩০০ বর্গফুট আয়তনের দুইটি হলে (এ ও বি) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ১৭৪টি স্টল।
সেন্টারের প্রধান ফটকের পূর্বপাশে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়নসহ প্রিমিয়ার ও সংরক্ষিত ক্যাটাগরির স্টল ছিল ৬২টি। হলের পেছনে ফরেন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়ন এবং প্রিমিয়ার ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়নসহ প্রিমিয়ার ও সংরক্ষিত ক্যাটাগরির স্টল ছিল ৫৩টি।
এছাড়া সেন্টারের মূল কম্পাউন্ডের বাইরে ৬ একর জমির একাংশে ফুড জোনে ৩২টি রেস্তোরাঁ ও মিনি রেস্তোরাঁ এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত ক্যাটাগরির স্টল ছিল ৬২টি।