নিজস্ব প্রতিবেদক :
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ একটি মহাকাব্য বলে মন্তব্য করেছেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাজাতে গিয়ে আমাদের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। এ ভাষণ শুধু আমাদের জাতি জীবনে নয়, সমগ্র মুক্তিকামী মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। এই ভাষণ একটি মহাকাব্য।’
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সম্প্রীতির বাংলাদেশ আয়োজিত ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় সভায় এসব কথা তিনি।
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ যখন বাজাতে গেছি, তখন আমাদের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। এই ভাষণ এত শক্তিশালী ছিল ৭৫ পরবর্তী সামরিক জান্তারা এই ভাষণ বাজাতে গিয়ে মানুষকে হত্যা করেছে। মাইক ব্যবসায়ীদের ব্যবসা পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের উপর অত্যাচার-নিপীড়ন নির্যাতন করেছে।’
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণের শুরুতেই তিনি হাজার বছরের বঞ্চনার কথা বলেছেন। স্বাধীনতার জন্য কাজী নজরুল, মাস্টারদা সূর্যসেন, তিতুমীরসহ হাজার মানুষের সংগ্রামের কথা বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে ফুটে উঠেছে। প্রথমে তিনি বঞ্চনার কথা বলেছেন, তারপর তিনি তোমার প্রেক্ষাপটের কথা বলেছেন এবং শেষে ভবিষ্যতের কথা বলেছেন।’
তিনি বলেন, জর্জ ওয়াশিংটন, মার্টিন লুথার কিংবা চার্চসিলের বক্তৃতার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের কোনো তুলনা নেই। সেদিন শুধু ১০ লক্ষাধিক মানুষ নয় সমগ্র বাঙালি তাকিয়েছিল রেসকোর্স ময়দানের দিকে। কি হচ্ছে সেখানে? রেসকোর্স ময়দানে যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল, তার থেকে বেশি উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল তার বাইরে। তখন বাংলাদেশের মানুষ অক্ষরে অক্ষরে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া নির্দেশনা পালন করেছে।
৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেদিনের ভাষণের যে প্রেক্ষাপট একদিনে তৈরি হয়নি। রেসকোর্স ময়দানের সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি সমগ্র জাতিকে হিমালয়ের মতো আগলে ধরেন। যা আমরা পরবর্তীতে ফিদেল কাস্ত্রোর মূল্যায়নে দেখতে পায়।
বঙ্গবন্ধুর দর্শনের প্রতি সবাইকে চলার আহ্বান জানিয়ে খালিদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শনকে আমরা যদি ব্যক্তি, সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে মেনে চলি, তাহলে আমাদের কখনও পিছনে হটতে হবে না। মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন।’
সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্বিবদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ্র চন্দ, বঙ্গবন্ধু গবেষক মেজর (অব.) হাফিজুর রহমান, অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচর্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ, সাংবাদিক শফিকুল করিম প্রমুখ।
আলোচনায় সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ববাসীর এগিয়ে যাবার পাথেয়। বিশ্ববাসীর জন্য বঙ্গবন্ধুর ভাষণ চিরকালীন মুক্তির সনদ। একটি ভাষণ যা একটি জাতি রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে। পৃথিবীর আর কোনো ভাষণের মাধ্যমে রাষ্ট্রের জন্ম হয়নি। সুতরাং নতুন প্রজন্মের সবাই এই ভাষণের গুরুত্ব অনুধাবন করে ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনে তার প্রতিফলন ঘটানোর আহ্বান জানান তারা।