নিজস্ব প্রতিবেদক :
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহায় ঘরমুখো যাত্রা আনন্দ ও স্বস্তিদায়ক হবে বলে আশাবাদী হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন খান। এ সময় তিনি বলেন, আনন্দ ও স্বস্তিদায়ক যাত্রা নিশ্চিতের দায়িত্ব সবাইকেই নিতে হবে৷ আমরা যেন স্বস্তির সঙ্গে আনন্দের সঙ্গে ঈদযাত্রা ও ফিরে আসতে পারি, সেজন্য আমরা কেউ ঝুঁকিপূর্ণ ঈদযাত্রায় শামিল হবো না, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
রোববার (২৬ মে) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপন উপলক্ষে মহাসড়ক নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখার লক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অতিরিক্ত আইজিপি এ কথা বলেন।
শাহাবুদ্দিন খান বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঈদযাত্রায় এবার বেশ কয়েকটি বিষয়ে কঠোর থাকবে হাইওয়ে পুলিশ। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ঈদযাত্রা বন্ধ করা। যানবাহনের ওভার স্পিড এবার শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কোনো যানবাহন যদি নির্ধারিত গতিসীমা অতিক্রম করে তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ঈদের সময় কোনো ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা মেনে নেয়া হবে না। আপনারা নিজেরা ঝুঁকিপূর্ণভাবে যানবাহনে যাত্রী ওঠাবেন না। যাত্রীদের প্রতি অনুরোধ, দুর্ঘটনা সম্পর্কে সচেতন হোন। জেনে-বুঝে গাড়ির ইঞ্জিনে-ছাদে উঠবেন না।
হাইওয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, আমরা ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল দিয়ে পেট্রল ডিউটি করে থাকি। ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করি। ঢাকাতে তো আছেই, মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সাব কন্ট্রোল রুম স্থাপন করে করা হবে। যেসব যানবাহন বিকল হবে, তাৎক্ষণিক সেটা সরানো ও সারানোর উদ্যোগ এবারও থাকবে।
দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সম্পূর্ণ সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এক হাজার ৪২৭টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা হচ্ছে।
এছাড়া সারাদেশেই পুলিশের ব্যবস্থাপনায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। যেকোনো কাজই করুক না কেন হাইওয়ে পুলিশের সদস্যদের জন্য বডি অন ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে। যাতে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়। সেবার মান বাড়ানোর জন্যই প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সড়ক অনেক প্রশস্ত হয়েছে। ডেডিকেটেড সাব স্টেশন হচ্ছে, এক্সপ্রেসওয়ে হয়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সার্বিক ও সমন্বিত উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে দাবি করে শাহাবুদ্দিন খান বলেন, গত ২-৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে স্বস্তির ঈদ ছিল গত ঈদ। সরকারের পরিকল্পনা পুলিশ সমন্বয় সাধন করে ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যেসব জায়গায় আমরা ব্যর্থ হয়েছি বা পারিনি সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ঈদযাত্রায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে অনিরাপদ যাতায়াত। যাত্রীরা যেভাবে পারেন উঠে-পড়েন, খোলা ট্রাকে, পিক-আপে, যানবাহনের ইঞ্জিনে; যা জীবনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আবার আমাদের চালকরাও সুযোগ নিয়ে যাত্রী তুলে নেন। এক্ষেত্রে মালিক ও চালকদের সচেতনতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। গত ঈদে ফিরতি যাত্রায় খোলা ট্রাক আর পিকআপের মধ্যে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গেলো।
ড্রোন দিয়ে যানজট, জটলা, বিকল গাড়ি খোঁজা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা, গাজীপুর, সাভারে ঈদের আগে গার্মেন্টস ছুটি হওয়ায় বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। আমরা এবার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো, ড্রোন দিয়ে দেখবো, কোথায় কী হচ্ছে। কোথায় জটলা লাগছে। গার্মেন্টস কর্মীরা যাতে ঈদে স্বস্তিতে বাড়ি যেতে পারেন সেজন্য কারখানাতেই ব্যবস্থাপনা রাখতে হবে৷ কারখানাগুলোই যেন পরিবহনের ব্যবস্থা করে এবং যানবাহন ঠিক করে দেয়। এক্ষেত্রে শিল্প পুলিশ, কারখানা কর্তৃপক্ষ, মালিক-শ্রমিক সবাই সহযোগী হবেন।