মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে শিশুধর্ষণ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি বেলাল হোসেনকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত শনিবার বিকালে দিকে উপজেলার বৈদ্যপাশা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত বেলাল উপজেলার কাঁকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের বৈদ্যপাশা গ্রামের মো. সায়েদ আলীর ছেলে।
বেলাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে এলাকায় তুলকালাম কাণ্ডের সৃষ্টি হয়েছে। কচুরিপানায় ভর্তি খালের পাড়ে কাজ করছিলেন বেলাল। এসময় হঠাৎ পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে খালের পানিতে ঝাঁপ দেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশও ঝাঁপ দেয় পানিতে। পরে প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় কচুরিপানার মধ্য থেকে বেলালকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এসময় ঘটনাটি দেখতে খালের দুই পাড়ে শত শত মানুষ ভিড় করেন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, বেলাল হোসেন ও বশির উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দিয়ে আসছে ১৪ বছরের ওই শিশুটিকে । তাদের ওই প্রস্থাবে রাজি না হওয়ায় জোরপূর্বক বাড়ির পাশে একটি জঙ্গলে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে । এরপর ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় বেলাল হোসেন ও বশির উদ্দিন । এতে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। শারীরিক পরিবর্তনের বিষয়টি টের পেয়ে অভিযুক্ত বেলাল হোসেন ও বশির উদ্দিনের পরিবারের কাছে বিচার দিয়েও কোনো প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবার। কোনো প্রতিকার তো পাইনি বরং বেলাল হোসেন ও বশির উদ্দিনের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় উল্টে শিশুটিকে নিয়ে তার পরিবারকে এলাকা ছাড়তে বলে। পরে কোনো উপায় না পেয়ে ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবার গত জুলাই মাসে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মির্জাগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এনামুল হক জানান, গত জুলাই মাসে বেলাল হোসেন ও বশির উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে এক নারী । মামলার পর থেকে আসামিরা আত্মগোপনে ছিলেন। গতকাল শনিবার বিকালে আসামি বেলাল নিজ গ্রামের একটি খালের পাড়ে কাজ করছিলেন। এ খবর পেয়ে তাকে গ্রেফতার করতে ওই খালের পাড়ে গেলে । পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে পড়েন বেলাল। তাকে ধরতে এই পুলিশ সদস্যরাও খালে ঝাঁপ দেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় কচুরিপানার ভেতর থেকে বেলালকে গ্রেফতার করা হয় ।
মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম আহম্মেদ এ তথ্য নিশ্চত করেছেন । তিনি জানান, আজ রোববার গ্রেফতারকৃত বেলালকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।