নিজস্ব প্রতিবেদক :
জ্বালানি মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও রেলপথ বিষয়ক উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতি দমন এবং প্রতিটি সেক্টরে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার কাজ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার কাজ শুরু করেছি কারণ আমরা শহিদ ও আহত শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্বশীল, কোন গোষ্ঠীর প্রতি না।’
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক সেমিনারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য সংস্কার ও টেকসই অবকাঠামো উন্নয়ন বিষয়ক এই সেমিনারের আয়োজন করে।
ফাওজুল কবির খান বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে অন্য সরকারের পার্থক্য হল- অন্য সরকারকে ক্ষমতায় যেতে হয় কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। মৌলিক পার্থক্য এই সরকার কায়েমি স্বার্থের ওপর দায়বদ্ধ নয়। এই সরকারের দায়বদ্ধতা জুলাই বিপ্লবের শহিদ ও আহতদের প্রতি। তাই বর্তমান সরকার সকল কাজ তাদের কথা মাথায় রেখে করছেন বলে উপদেষ্টা জানান।
বিএসআরএফ সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাবের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম আতিকুর রহমান এবং সঞ্চালনা করেন বিএসআরএফ সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।
ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘জনগণের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে অনেকের উপকার হতে পারে এ রকম প্রকল্প গ্রহণ করবে অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার। গণঅভ্যুত্থানের যে আকাক্সক্ষা সেটাই আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি।’
তিনি বলেন, জনগণের টাকা জনগণের স্বার্থে ব্যবহারের কথা মাথায় রাখতে হবে। সরকার একটি আমানত। ব্যক্তি স্বার্থ, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়তার স্বার্থের বাইরে গিয়ে এই আমানতকে রক্ষা করতে হবে।
সংস্কার সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার প্রধানত দুই প্রকার। প্রথম হলো- নীতির সংস্কার। পূর্বের সরকারের দুর্নীতির কাঠামো সম্পূর্ণরূপে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। ২০১০ সালের আইন স্থগিত এবং ৩৪ক ধারা বাতিল করে এখন থেকে গণশুনানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম নির্ধারণ করা হবে। এদিকে মেট্রোরেলের নীতিমালার শর্ত ছিল এমডি হবে সরকারের সাবেক সচিব। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের আওতায় এই শর্ত বাদ দেওয়া হয়েছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি লিমিটেডের এমডি পদে বুয়েটের অধ্যাপককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ফাওজুল কবির খান বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় কোনটাই বাড়ানো হবে না। টেন্ডারের ক্ষেত্রে প্রকৃত প্রতিযোগিতা কিভাবে সৃষ্টি করা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। যতটা সম্ভব দুর্নীতি কমিয়ে জন আকাক্সক্ষা পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়েছেন উপদেষ্ট।
সেমিনারে প্যানেলিস্টদের আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ শামসুল হক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শর্মিন্দ নীলর্মি, সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও আন্তর্জাতিক পরিবেশ বিশেষজ্ঞ মেহেদী এইচ ইমন প্রমুখ।