সিলেট প্রতিনিধি :
সিলেটে আলোচিত ছয় বছরের শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিন হত্যা মামলায় সাবেক গৃহ শিক্ষিকা মার্জিয়াসহ চার আসামির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শামসুল আরেফিন জিহাদ ভূঁইয়া ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে সিলেট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাজী মো. আবু জাহের বাদল ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কানাইঘাট থানা থেকে আসামিদের আদালতে আনা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. আব্দুল খালিক। তিনি জানান, আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত চার আসামিকে সোমবার সিলেট জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুলে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। এ সময় আদালত আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে রবিবার ভোরে নিজ বাড়ির পাশের একটি খাল থেকে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ মুনতাহার প্রতিবেশী শামিমা বেগম মার্জিয়া, তার মা আলিফজান বেগম, আলিফজানের মা কুতুবজান বেগম, একই এলাকার নাজমা বেগম ও ইসলাম উদ্দিনসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
পুলিশ জানায়, মুনতাহার বাবা শামীম আহমদ শনিবার (৯ নভেম্বর) কানাইঘাট থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি অপহরণ মামলা করেন। রবিবার মরদেহ উদ্ধারের পর সেটিকে হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে শামিমা বেগম মার্জিয়া, তার মা আলিফজান বেগম, একই এলাকার নাজমা বেগম ও ইসলাম উদ্দিনকে।
কোর্ট ইন্সপেক্টর জামসেদ আলম, মামলাটি তদন্ত করছে কানাইঘাট থানা পুলিশ। অধিকতর তথ্য জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কি না তা রিমান্ড শেষে জানা যাবে।
মুনতাহা সিলেটের কানাইঘাট সদর ইউনিয়নের বীরদল গ্রামের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে। নিখোঁজের আট দিন পর শিশুটির মরদেহ পাওয়া যায় ঘরের পাশেই। রবিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে খালে পুঁতে রাখা থেকে মুনতাহার মরদেহ তুলে নিকটস্থ একটি পুকুরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন আলিফজান বেগম। কিন্তু প্রতিবেশীরা বিষয়টি বুঝতে পেরে পুকুরে মরদেহ ফেলে দেওয়ার আগেই তাকে আটক করে। এ সময় শিশুটিকে নিজের কোল থেকে মাটিতে ফেলে দিয়েছিলেন আলিফজান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে, মুনতাহার মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে ওই দিনই আসরের নামাযের পর গ্রামের পঞ্চায়েতি কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।