নিজস্ব প্রতিবেদক :
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের ডক্টরেট ডিগ্রি স্থগিত করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন। ভর্তির যোগ্যতা পূর্ণ না করে ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ থেকে ডক্টর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিবিএ) ডিগ্রি অর্জনের সত্যতা পাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের এক সভায় গত ২০ জুলাই এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান জানান, তথ্যানুসন্ধান কমিটির রিপোর্টে বেনজীর আহমেদের ভর্তি ফরমে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, তার শিক্ষাগত ডিগ্রির তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ করা হয়নি এবং নিয়মবহির্ভূতভাবে তথ্য দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্তরে ৫০ শতাংশ নম্বর থাকা বাধ্যতামূলক, যা বেনজীর আহমেদ পূর্ণ করেননি। এ কারণে তিনি ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ এবং সদস্য হিসেবে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম শহিদুল ইসলাম ও রেজিস্ট্রার মুন্সী শামস উদ্দিন আহমদ রয়েছেন।
তদন্ত কমিটিকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত বেনজীর আহমেদের ডিগ্রি স্থগিত থাকবে।
বেনজীর আহমেদ ২০১৯ সালে ঢাবি থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি নেন। এরপর থেকে তিনি নামের আগে ডক্টর শব্দটি ব্যবহার করা শুরু করেন। যদিও ডক্টরেট ডিগ্রি নেওয়ার প্রোগ্রামে ভর্তির যোগ্যতাই তার ছিল না। ডিবিএতে ভর্তির জন্য স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হয়। শিক্ষাজীবনের সব পাবলিক পরীক্ষায় কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হয়। যার কোনোটাই বেনজীরের ছিল না। তার ভর্তির ক্ষেত্রে মৌলিক শর্তগুলো শিথিল করা হয়েছিল সুপারিশে। শর্ত শিথিল করে তাকে ভর্তির সুযোগ করে দিয়েছিলেন ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের তৎকালীন ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তিনি ছিলেন বেনজীরের ‘ডক্টরেট’ প্রোগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক।