রবিবার , ২৪ আগস্ট ২০২৫ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অপরাধচিত্র বিশেষ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. খুলনা
  7. খেলাধুলা
  8. চট্রগ্রাম
  9. জাতীয়
  10. জেলার খবর
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. প্রবাসের কথা
  14. বরিশাল
  15. বিনোদন

কক্সবাজারে অসাধু রেঞ্জ ও বিট কর্মকর্তার যোগসাজশে দখল হচ্ছে বনভূমি

প্রতিবেদক
Newsdesk
আগস্ট ২৪, ২০২৫ ৭:০৮ অপরাহ্ণ

কক্সবাজার প্রতিনিধি : 

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন রাজারকুল রেঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে নির্বিচারে চলছে গাছ নিধন ও বনভূমি দখল। সেই সাথে প্রকাশ্যে গাছ পাচারের ঘটনা ঘটছে ।এছাড়াও সুফল বনায়ন নিয়ে চলেছে হরিলুট। এছাড়াও বনভুমি বিক্রি ও পাহাড় কেটে পাঁকা দালান নির্মাণে সহযোগীতা করে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হয়েছে খোদ রেঞ্জ কর্মকর্তা এটিএম আলী নেওয়াজ ফরেস্টার। রাজারকুল রেঞ্জের আওতাধীন চার বিট রাজারকুল, আফাররেজু, দাড়িয়ারদীঘি, পাগলিরবিল বিট। রাজারকুল রেঞ্জের আওতাধীন এলাকাগুলোতে নির্বিচারে পাহাড় কাটা,বনভুমি বিক্রি ও মূল্যবান গাছ কেটে পাচারের ঘটনা রীতিমতো পরিবেশবাদী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাবিয়ে তুলেছে। এতে লাভবান হচ্ছে রেঞ্জ কর্মকর্তা এটিএম আলী নেওয়াজ।

এদিকে, রেঞ্জ কর্মকর্তার যোগসাজশে দিন-রাত গাছ কাটা এবং কাঠ পাচার অব্যাহত থাকলেও সংশ্লিষ্টদের রহস্যজনক নিরবতা পালন করছে বলে অভিযোগ।রীতিমত রেঞ্জ কর্মকর্তার নিরব ভুমিকার কারণে কাঠ চোরেরা আস্কারা পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে গাছ নিধনে মেতে উঠেছে।

স্থানীয় পরিবেশ প্রমীরা জানান, সেখানে সবুজ প্রাকৃতিক বিভিন্ন মূল্যবান গাছপালা এবং পাহাড় কেটে চাষের জমি করেছে।এভাবে পাহাড় কাটা, বনভূমি দখল করা পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে পরিবেশ প্রেমিরা মনে করেন। এভাবে পাহাড় এবং বনের গাছ কাটলে খুব অচিরেই কক্সবাজারের বনভুমি ধ্বংস হবে করেন সচেতন মহলের ধারণা। রাজারকুল রেঞ্জের আওতাধীন বনভূমিতে স্হাপিত প্রতিটি পানের বরজ মালিকদের কাছে থেকে মোটা অংকের টাকা যায় রেঞ্জ কর্মকর্তার পকেটে।নতুন করে কেউ যদি পানের বরজ করতে চাই তাকেও গুনতে হয় মোটা টাকা,যদি না দেয়া হয় তাহলে চলে উচ্ছেদের নামে তাণ্ডব। মূল কথা ওই রেঞ্জের বনভূমিতে কোনপ্রকার স্হাপনা করতে গেলে কর্তা বাবুকে দিতে মোটা অংকের টাকা। দাড়িয়ারদীঘি বন বিটে নির্বিচারে বনভূমি দখল, বিক্রি, পাহাড় কেটে অবৈধ বসতি নির্মাণ, বনের গাছ পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধ আশংকাজনক হারে বেড়ে গেছে। খোদ রেঞ্জ কর্মকর্তা এটিএম আলী নেওয়াজ ও বিট কর্মকর্তা ইসরায়েল হোসেনের সাথে বনভূমি অবৈধ দখলদাররা যোগসাজশে এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে অভিযোগ।দাড়িয়ারদীঘি বিট কর্মকর্তা ইসরায়েল হোসেন যোগদানের পর থেকেই শুরু হয় বেপরোয়া গতিতে পাহাড় কাটা, বন উজাড়, বনভূমি অবৈধ দখল, সামাজিক বনায়নের প্লট দেয়ার নামে টাকা আদায়, অবৈধ করাতকল স্থাপন সহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। বিট কর্মকর্তা ইসরায়েল হোসেন যোগদানের পর তাঁর সাথে বিশেষ সখ্যতা গড়ে উঠে শীর্ষ পাহাড়খেকোদের সাথে। নতুন করে আর কোন মামলা না হওয়ার বিশেষ গোপন চুক্তিতে পাহাড় কাটার ‘লাইন’ দেন বনভূমি অবৈধ দখলদার সিন্ডিকেটকে।

অভিযোগ উঠেছে, সরকারি বনভূমি, বন্যপ্রাণী ও বনায়ন রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত বিট কর্মকর্তা ইসরায়েল হোসেন রক্ষক না হয়ে ভক্ষকের ভুমিকা পালন করছে। বিট কর্মকর্তা ইসরায়েল হোসেন জানান, সব বিষয় ডিএফও স্যার জানেন। রাজারকুল রেঞ্জের বনাঞ্চল থেকে নির্বিচারে নিধন করা মুল্যবান গাছগুলো পাচার করে যাচ্ছে। এতে করে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মূল্যবান বৃক্ষ দিনদিন শুন্য হয়ে ন্যাড়া ভুমিতে পরিণত হচ্ছে। চোরাই কাঠ পাচারকারী চক্র বনের মূল্যবান গাছ কেটে অন্যত্র পাচার করে দিচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করলেও কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা এটিএম আলী নেওয়াজ এ ব্যাপারে নিরব ভুমিকা পালন করছেন।বনের গাছ চুরি অব্যাহত থাকায় সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দিনদিন।ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অর্থায়নে ‘সাসটেইনেবল ফরেস্ট অ্যান্ড লাইভলিহুড (সুফল) প্রজেক্ট’ এর আওতায় সরকারের গৃহিত নতুন বনায়ন কর্মসুচী এই রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা ভেস্তে যেতে বসেছে। খোদ রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা এটিএম আলী নেওয়াজের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে সুফল প্রকল্পের অধীনে টেকসই বনায়ন বিকল্প জীবিকায়ন প্রকল্পের সৃজিত বনায়ন বিফলে চলে গেছে।গত জানুয়ারিতে সুফল বনায়নে আগাছা পরিস্কারের কথা থাকলেও তা করা হয়নি।সুফল বনায়নের বেশির ভাগ বিভিন্ন প্রজাতির স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী চারা গাছ মারা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বনাঞ্চলের মুল্যবান গাছ কেটে পাচার সহজতর এবং দ্রুত অন্যত্র পাচারের জন্য সংরক্ষিত বনের ভেতর গাছ ও পাহাড় কাটছে কাঠ পাচারকারী ও বনভূমি দখলদাররা। কাঠ চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের সাথে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে কাঠ ও পাহাড়ি পাথর পাচার করে পকেট ভারি করছে রেঞ্জ কর্মকর্তা এটিএম আলী নেওয়াজ। নির্বিঘ্নে ডাম্পার যোগে দিনে ও রাতে কাঠ পাচার করা হচ্ছে বনের মূল্যবান কাঠ। অবৈধ দখলদারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে দালান নির্মাণে সহযোগীতাও করেছে রেঞ্জ কর্মকর্তা।ওই এলাকায় এধরনে প্রতিটি অবৈধ কাঁচা পাকা দালান থেকে তিনি লাখ লাখ টাকা অনৈতিক সুবিধা নিয়েছে বলে অভিযোগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বনজায়গীরদার (ভিলেজার) জানান, বিভিন্ন পয়েন্টে দিনে ও রাতে গাছ কাটা যাচ্ছে।এমনকি মুল্যবান গাছ ছাড়াও বনাঞ্চল থেকে লাকড়ী যাচ্ছে রামুর এলাকার বিভিন্ন ইট ভাটায়। রেঞ্জে প্রতিনিয়ত গাছ নিধন করেছে কাঠ চোরেরা। তাদের দাবী সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন বন কর্মকর্তারা এসব এলাকা পরিদর্শন করলে শতশত সদ্যকাটা গাছের মুথা পাওয়া যাবে।রেঞ্জ কর্মকর্তা মাঝে মধ্যে টহলে গিয়ে গাছ নিধন দৃশ্য দেখেও এড়িয়ে যান।কারণ হিসেবে তারা বলেন, প্রতিটি নিধন হওয়া গাছের টাকা পান রেঞ্জ কর্মকর্তা। অথচ উক্ত বনাঞ্চলে এসব গাছ বড় করতে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।গাছ বড় করতে লেগেছে দীর্ঘ সময়।অথচ বনের রক্ষক রেঞ্জ কর্মকর্তা কাঠ চোরদের সাথে আতাত করে এসব গাছ অতিঅল্প সময়ে মোটা টাকায় বিক্রি করে দিচ্ছে।কাঠ চোরকারবারীদের সাথে তার রয়েছে দহরম মহরম সম্পর্ক।ফলে রেঞ্জ কর্মকর্তা যোগসাজসে পাচার করে দিচ্ছে বনের মূল্যবান কাঠ।

এব্যাপারে রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা এটিএম আলী নেওয়াজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব বিষয় অস্বীকার করেন। কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: নুরুল ইসলামের মুঠোফোন কল দিয়েও রিসিভ না করা বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

সর্বশেষ - রাজনীতি