নিজস্ব প্রতিবেদক :
জুলাই আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত অনেক পুলিশ কর্মকর্তাই আত্মগোপনে চলে গেছেন। আত্মগোপনে থাকা অনেক কর্মকর্তাই দেশ ছেড়েছেন। এমন ১৫ কর্মকর্তার অবস্থান সনাক্ত করতে পেরেছে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)।
তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। তবে এখনো কোনো সাড়া মেলেনি।
পুলিশ সদর দফতরের তথ্যমতে, শনাক্ত হওয়া ১৫ জনের মধ্যে রয়েছেন— বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদার এবং ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৮১ জন পুলিশ সদস্য কর্মস্থল থেকে পালিয়ে আছেন। তাদের মধ্যে ডিআইজি থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাসহ কনস্টেবলও রয়েছেন।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের উডল্যান্ড শহরে সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদের একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের তালিকায়ও দেখা গেছে, তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। একই দেশে আছেন মনিরুল ইসলামও। সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান অবস্থান করছেন যুক্তরাজ্যে। আর প্রলয় কুমার জোয়ারদার ও সৈয়দ নুরুল ইসলাম ভারতে রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অভ্যুত্থানের পর পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে ১ হাজার ৪৯০টি মামলা। একই সময়ে অন্তত ১৩৭ জন পুলিশ সদস্য কর্মস্থল ত্যাগ করেন। তাদের মধ্যে ৫৬ জন ফিরে এলেও ৮১ জন এখনও পলাতক রয়েছেন। পলাতকদের মধ্যে ৩ জন ডিআইজি, ১০ জন অতিরিক্ত ডিআইজি, ১১ জন পুলিশ সুপার, ৯ জন অতিরিক্ত এসপি, ৫ জন এএসপি, ২৭ জন পরিদর্শক, ৮ জন এসআই, ৩ জন এএসআই এবং ৫ জন কনস্টেবল রয়েছেন।
গত ৭ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে ডিআইজি থেকে পরিদর্শক পদমর্যাদার ৪০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাদের অনুকূলে দেওয়া পদকও প্রত্যাহার করা হয়। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী, ‘পলায়ন’ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ইতোমধ্যে অনেক কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। অপরদিকে বিতর্কিত ভূমিকার কারণে গত এক বছরে পুলিশের বিভিন্ন স্তরের ৮৬ জনকে অন্য ইউনিটে সংযুক্ত করা হয়েছে, ৮২ জনকে ওএসডি এবং ৫৫ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।