আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
গাজার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরকে লক্ষ্য করে চালানো এই হামলায় কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসির।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বিভাগ জানায়, এই হামলায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের একজন সিনিয়র কমান্ডার নিহত হয়েছে। এর মাধ্যমে হামাসের আন্ডারগ্রাউন্ড সামরিক কাঠামো ভেঙে পড়বে বলে মনে করছে তারা।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন পরিচালক জানান, জাবালিয়া এলাকার হামলায় কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনাস্থলের ছবিগুলোতে দেখা যায় বোমা হামলায় মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে আবাসিক ভবন, পাশাপাশি হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর।
গত ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের অভ্যন্তরে সাঁড়াশি হামলা চালিয়ে এক হাজার ৪০০ জনকে হত্যা করে ও কমপক্ষে ২৩৯ জনকে জিম্মি করে নিয়ে আসে। এরপর থেকেই ফিলিস্তিনি লক্ষ্যবস্তুতে একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। প্রতিশোধমূলক বোমা হামলায় এ পর্যন্ত আট হাজার ৫০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
এদিকে, মিসরে গুরুতর আহত ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসার জন্য আজ বুধবার (১ নভেম্বর) গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহ সীমান্ত খুলে দেওয়া হতে পারে।
অন্যদিকে, গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের বোমারু বিমান হামলা চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির প্রতিরক্ষ বিভাগ। তবে হামলায় ঠিক কতজন নিহত হয়েছে সে বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। হামাস নিয়ন্ত্রিত এলাকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে হামলায় মৃতের সংখ্যা ৫০। তবে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে ওই হামলায় ২৫ জন মারা গেছে। অন্যদিকে, গাজার হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন তারা ১২০টি মরদেহ পেয়েছেন।
এদিকে, গাজার বেশকিছু টানেল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের ট্যাঙ্ক ও সামরিক যানবাহনের বহর ধীর গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। ওই টানেলগুলো হামাস যোদ্ধারা তাদের কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল বিমান থেকে বোমাবর্ষণ ও স্থল অভিযানে ৩০০ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। সেনাবাহিনী জানায় গাজার প্রতিটি অংশে হামলা চালিয়েছে তারা।
ওদিকে, ইসরায়েল থেকে কয়েকশ মাইল দক্ষিণপূর্বে ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে বিপুল ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছোড়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হুথি বিদ্রোহীরা।
অন্যদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, গাজায় ‘জনস্বাস্থ্য দুর্যোগ’ নেমে আসা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ইউনিসেফ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, গাজায় মোট চাহিদার মাত্র পাঁচ শতাংশ পানি সরবরাহ ব্যবস্থা রয়েছে। ইউনিসেফ আরও জানিয়েছে, পানিশূন্যতার কারণে শিশু মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে।