নিজস্ব প্রতিবেদক :
আইন-আদালত বা সরকার নয়, দেশের জনগণ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
বুধবার (১ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আজহার শফিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি সব সময় বলেছে আওয়ামী লীগের বিচার জনগণই করবে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আওয়ামী লীগ যত কথা বলে, ২০২৪ সালের গণহত্যা, দিনের ভোট রাতে করা কিংবা প্রতিহিংসাপরায়ণ কর্মকাণ্ড নিয়ে তাদের কোনো অনুশোচনা নেই। জনগণের কাছে তাদের নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘জনগণ দীর্ঘদিন ধরে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেনি। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আমরা চাই, সেই নির্বাচন হোক। নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ আসুক।’
জাহিদ হোসেন বলেন, “১৯৯০ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ১ অক্টোবরকে ‘আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস” হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একসময় বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪৭ বছর। সচেতনতা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে বর্তমানে তা বেড়ে ৭৩ বছরে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এখনো সরকারি চাকরিতে নির্দিষ্ট বয়সের পর কর্মকর্তাদের বলা হয়, “আপনাদের আর প্রয়োজন নেই”। অথচ দেশের শীর্ষ উপদেষ্টাদের অনেকেই প্রবীণ। আমরা যখন কাউকে বলি তার আর প্রয়োজন নেই, তখন তার মানসিক জগতে কী প্রভাব পড়ে, সেটা আমাদের ভেবে দেখা উচিত।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে দেখা যায়, সত্তরোর্ধ্ব একজন মানুষকেও চাপাচাপি করে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে হয়। অথচ স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশে প্রবীণদের সম্মান দেখিয়ে টিকিট কাটা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আমাদের দেশে এখনো সেই সংস্কৃতি তৈরি হয়নি।’
তরুণ ও প্রবীণ প্রজন্মের মধ্যে ‘সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা’ উল্লেখ করে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আজকের তরুণেরা একদিন বৃদ্ধ হবেন। তাই প্রজন্মের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি না হলে আমরা টিকে থাকতে পারব না। যে জাতি তার উত্তরাধিকারকে সম্মান করে না, সে জাতি দীর্ঘস্থায়ী হয় না।’
প্রবীণদের সম্মান ও কল্যাণ নিশ্চিতে রাষ্ট্র ও সমাজের দায়িত্বের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘সমাজটা আমাদের সবার। প্রবীণদের জন্য আলাদা সুযোগ-সুবিধা ও বাজেট রাখা কঠিন কোনো বিষয় নয়। তাঁদের যেন সমাজের বোঝা মনে না হয়, বরং সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে পারেন, সে বিষয়ে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া প্রমুখ।