নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, তারেক রহমান যদি ২১ আগস্টের মামলায় বিনা কারণে আসামি হতে পারেন, খালেদা জিয়া যদি দুই কোটি টাকার মামলায় পাঁচ বছর জেল খাটতে পারেন, তবে ১১৮ মামলার জন্য শেখ হাসিনার ১০০ বছর জেল হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, গত ১৬ বছর ধরে আপনি মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানানোর জন্য চেষ্টা করে গেছেন।
বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে আপনার সেই আশা চূর্ণ–বিচূর্ণ করে দিয়েছে।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব ষড়যন্ত্রমূলক মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে এ অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
শেখ হাসিনার উদ্দেশে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ইউটিউব থেকে শুনেছি তিনি বাংলাদেশের বর্ডারের কাছে আছেন। এমন কথা বলতে তার লজ্জা লাগে না? হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ তো চোর ছিলেন, বাটপার ছিলেন। ক্ষমতা দখল করেছিলেন জোরপূর্বক। তবুও তিনি দেশ থেকে পালিয়ে যাননি।
তিনি বলেন বলেন, আপনার পিতা ও পরিবারকে নিয়ে এত অহংকার, স্বাধীনতা নাকি আপনারা এনেছেন, তাহলে পালালেন কেন? পালালেন এই কারণে, আপনি ছিলেন চোর, আপনি ছিলেন ডাকাত, আপনি ছিলেন গণতন্ত্র হত্যাকারী। আপনি ছিলেন ইলিয়াস আলী চৌধুরী আলমকে গুমকারী, খালেদা জিয়াকে বিনা কারণে মামলা দেওয়ার হুকুমদাতা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপির এ নেতা বলেন, যে লোকটি আমার পা অচল করে দেন, যে হারুন (ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশিদ) বিএনপির অফিস তছনছ করে দেন, যে বিপ্লব-মেহেদিরা বিএনপির অফিসে ঢুকে অস্ত্র রেখে আমাদের মামলা দেন, তাদের আইনের আওতায় আনুন। মানুষকে একটু দেখান। এরাই অত্যাচারী এরাই ছিল ক্ষমতালিপ্সু। এরাই শেখ হাসিনার ডান হাত।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, গত ১৬ বছরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, রুহুল কবির রিজভীসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী যে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তা দেশের জনগণ আপনাকে মনে করিয়ে দেবে। ১৬ বছরের ৯ বছর আমি জেল খেটেছি। কোনদিন বাইরের খাবার খেতে পারিনি। এখন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পতিত সরকারের দোসর সালমান এফ রহমানকে গুলশান ও ধানমন্ডির রান্না করা খাবার খাওয়াবেন, তা বাংলাদেশের মানুষ কোনদিনও মেনে নেবে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনুসের উদ্দেশে বিএনপির সাবেক এ চিফ হুইপ বলেন, আপনার বিরুদ্ধে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আমার নেতা তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজনীতি করেন না। তিনি বলে দিয়েছেন, সময় দিলাম। মৃত ব্যক্তির ভোট যেন আর বাংলাদেশে না হয়।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, গত ১৬ বছরে ৯২ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে আওয়ামী লীগ। কানাডায় বেগমপাড়া করেছেন তাদের নেতারা। দুবাইয়ে বাড়ি করেছেন। আমাদের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, যাকে আমরা মহামান্য বলি, ইউটিউবে শুনি তারও নাকি কিছু কিছু বাড়িঘর বাইরে দেখা যায়। লজ্জা হয় না। শরম লাগে না?
তিনি বলেন, বাংলাদেশ তারেক রহমানের নেতৃত্বে এমন এক দেশ হবে, যে দেশে গণতন্ত্র থাকবে, যে দেশে মিটিং করতে কোনো অনুমতি লাগবে না, যে দেশে মানুষ নিত্যপণ্যের সিন্ডিকেট তৈরি করবে না। এমন একটি সরকার বাংলাদেশের আসবে।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কোথায় মায়া, কোথায় মতিয়া চৌধুরী? কোথায় আবদুল হামিদ? কোথায় শাজাহান খান? কোথায় শামীম ওসমান? আপনাদের চেহারা তো দেখি না। পালিয়েছেন নাকি, বাংলাদেশে আছেন তা আমার বিষয় নয়। কতদিন পালিয়ে থাকবেন?
জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরামের সভাপতি মনজুর রহমান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর আমির হোসেন আমুসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।