নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর পরীবাগে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আবদুর রহমানের বাসার লিফটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তাকে মারধর করেছে আরেক কর্মকর্তা। এই ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর আজিজুলের নতুন পদায়ন বাতিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) তাকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অ্যান্ডোপ্যারাসাইটোলজি অনুবিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে চলতি দায়িত্বে পদায়ন করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতেই তার পদায়ন বাতিল করে মন্ত্রণালয়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর পরীবাগ এলাকার দিগন্ত টাওয়ারে মন্ত্রীর বাসার লিফটে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মলয় কুমার শূর গত শুক্রবার এই ঘটনায় শাহবাগ থানায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (লিভ, ডেপুটেশন অ্যান্ড ট্রেনিং রিজার্ভ) মো. আজিজুল ইসলাম নামে এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা করেন।
মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, মন্ত্রীর ডাকে তিনি গত বৃহস্পতিবার রাতে পরীবাগে যান মলয় কুমার। রাত ৯ টার দিকে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তিনি লিফটে বাসার নিচে নামেন। লিফট থেকে বের হওয়ার মুখে আজিজুল তাকে আঘাত করেন। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা ও নাকে আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। মলয় কুমার এ সময় চিৎকার করলে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে। তবে আজিজুল তাকে আরও ভয়ভীতি দেখিয়ে ও হত্যার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় মলয়কে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। আজিজুলের আঘাতে মলয় কুমারের মুখমণ্ডল ফেটে যায়, চিকিৎসক তাতে সেলাই দিয়েছে। এ ছাড়া বুক ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে তাঁর আঘাত রয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাজিরুর রহমান। তিনি বলেন, একটি মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।
এ বিষয়ে মলয় কুমার বলেন, আজিজুল আমাকে আচমকা হামলা করে। কেন তিনি এ রকম করেছে এটা তিনিই বলতে পারবেন। বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি, পাশাপাশি মামলাও করেছি। এখন আইনগত বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবেন।
তবে মলয় কুমারের ধারণা, সম্প্রতি পদায়ন নিয়ে কোনো কারণে তাকে সন্দেহ করে এই হামলা চালাতে পারেন আজিজুল।
ঘটনার পর পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত আজিজুল ইসলাম। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। কয়েকবার তাকে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি। পরবর্তীতে তাঁর ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে কথা বলতে মন্ত্রী আবদুর রহমানকে ফোন করা হলে তার ব্যক্তিগত সহকারী ফোনটি রিসিভ করেন। তিনি বলেন, স্যার, অসুস্থ বিষয়টি নিয়ে এখন কথা বলতে পারবেন না।
এর আগে আজিজুল ২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর তৎকালীন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. এমদাদুল হক তালুকদারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছিলেন। এই ঘটনায় তাকে বিভাগীয় শাস্তি দেওয়া হয়। দুটি বিভাগীয় মামলা তার পদ অবনমিত করে পঞ্চম গ্রেডের জুনিয়র কর্মকর্তা পদমর্যাদার দেওয়া হয়।