নিজস্ব প্রতিবেদক :
ন্যূনতম কর ব্যবস্থা সম্পর্কে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছেন, “কোনো সন্দেহ নেই ন্যূনতম কর একটা কালাকানুন, এটা স্বীকার করতেই হবে। বিজনেসে কর হবে মুনাফার ওপর। তা না করে মিনিমাম কর নির্ধারণ করছি। সমস্যা হচ্ছে, এগুলো ঠিক করতে গেলে আমাদের কর আহরণ কমে যাবে।”
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানে একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর ‘কর্পোরেট কর ও ভ্যাট সংস্কার’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র গবেষক মো. তামিম আহমেদ। সঞ্চালনায় ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় একটি নতুন প্রকল্প শুরু করেছি। আমরা চাই অটোমেটেড এনবিআর। সব কিছু যদি ডিজিটাল করতে পারি, তাহলে বোতাম টিপলেই কর ও ভ্যাট রিটার্ন হয়ে যাবে। বর্তমানে অডিট রিপোর্টের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ম্যানুয়াল সিলেকশন বন্ধ করে দিয়েছি। এখন থেকে ঝুঁকির ভিত্তিতে অডিট হবে।”
তিনি আরও বলেন, “করজাল বাড়াতে পারলে কর হার ও ভ্যাট হার কমানো সম্ভব। এক রেট ভ্যাট বাস্তবায়ন এবং রিফান্ড স্বয়ংক্রিয়ভাবে করদাতার হিসাবে যাওয়া উচিত।”
অনুষ্ঠানে প্রকাশিত সিপিডির এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ৮২ শতাংশ ব্যবসায়ী বর্তমান করহারকে ‘অন্যায্য’ ও ব্যবসার উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় বাধা বলে মনে করেন। অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ীদের ৭৯ শতাংশ কর কর্মকর্তাদের জবাবদিহির অভাবকে, ৭২ শতাংশ কর প্রশাসনে দুর্নীতিকে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখেছেন।
ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১২৩টি প্রতিষ্ঠানের ওপর পরিচালিত এই সমীক্ষায় ৬৫ শতাংশ ব্যবসায়ী জানান, তারা নিয়মিত কর দাবিকে কেন্দ্র করে কর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। অভিযোগ রয়েছে, অনেক সময় পূর্বাভাস ছাড়াই কর আরোপ করা হয়।
ভ্যাট বিষয়ক আলাদা এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৭৩.৫ শতাংশ ব্যবসায়ী জটিল ভ্যাট আইনকে বড় বাধা বলে মনে করেন। এছাড়া অস্পষ্ট নীতিমালা, সীমিত সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ ঘাটতি, পণ্য-সেবার শ্রেণিবিন্যাসের জটিলতা এবং উচ্চ অনুবর্তন ব্যয়কে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ব্যবসায়ীরা। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এন্টারপ্রাইজ সার্ভের কাঠামো অনুসরণ করে পরিচালিত এই সমীক্ষায় ঢাকা ও আশপাশের ৩৮৯টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।