নিজস্ব প্রতিবেদক :
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অর্থাৎ আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও তার স্ত্রী রেহানা হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ের সময় বিষয়টি তুলে ধরেন দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বৈধ আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে; তাই সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও তার স্ত্রী রেহানা হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি মামলায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং অর্থপাচার প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে, জানান আক্তার হোসেন।
প্রথম মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামি সাবের হোসেন চৌধুরী ১৯৮৯ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত জানা আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে ১২ কোটি ২৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকার বেশি সম্পদ অর্জন করেন এবং ২১টি ব্যাংক হিসাবে মোট ১২৪ কোটি টাকার বেশি সন্দেহজনক লেনদেন করেন।
দ্বিতীয় মামলায় সাবের হোসেনের স্ত্রী রেহানা হোসেনের বিরুদ্ধে জানা আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকার বেশি সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে বলে দুদক জানিয়েছে।
রেহানা হোসেন ১৯৯৯ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তিনটি ব্যাংক হিসাবে মোট ১৫০ কোটি টাকার বেশি সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এই মামলায় সাবের হোসেনকেও আসামি করা হয়েছে।
সাবের হোসেন চৌধুরী আওয়ামী লীগ থেকে পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি প্রথম বার সবুজবাগ ও মতিঝিল থানা নিয়ে ঢাকা-৬ সংসদীয় আসন এবং পরবর্তীতে ২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা থানা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৯ সংসদীয় আসন থেকে টানা চারবার সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভায় তিনি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সাবের হোসেন চৌধুরী ১৯৯৯ সালে প্রথমে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভার সদস্য হন। পরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলান।
প্রথম এবং একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে ২০১৪-২০১৭ সালে সাবের হোসেন জেনেভাভিত্তিক ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) ২৮তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০২৪ সালের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পল্টন ও খিলগাঁও থানার ছয়টি মামলায় গ্রেপ্তার হন সাবের হোসেন। কয়েকদিন বাদে জামিনে মুক্ত হন তিনি। সম্প্রতি তার সঙ্গে কয়েকটি পশ্চিমা দেশের রাষ্ট্রদূতের খবর নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম হয়।