নিজস্ব প্রতিবেদক :
আশুলিয়ায় গুজব ছড়িয়ে সহিংসতা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে ‘আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভা’ শেষে তিনি এ দাবি করেন।
উপদেষ্টা বলেন, আশুলিয়ায় গার্মেন্টস কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে কাজ করে যাচ্ছিল। কিন্তু প্রথম থেকেই দেখছি, সুনির্দিষ্ট কিছু মানুষ উসকানি দিয়ে আসছে। গতকালও যে ঘটনা ঘটেছে, সেটার মূল ঘটনা সবার জানা দরকার। একজন শ্রমিক সেখানে নিহত হয়েছেন, আমরা দুঃখিত। আমাদের তরফ থেকে এরই মধ্যে ১৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া যারা আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
‘একটি গুজবের ভিত্তিতে গতকালের ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল। গুজব ছড়ানো হয়েছিল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একজনকে ধর্ষণ করেছে এবং দুজনকে খুন করে মরদেহ ফেলে রেখেছে। এভাবে কারাখানাগুলো থেকে শ্রমিকদের নামিয়ে আনা হয়েছিল।’, যোগ করেন তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি ভাঙচুরসহ তাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন শ্রমিকরা। কিন্তু তখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু শ্রমিকদের মধ্য থেকে অনুপ্রবেশকারী গুলি ছুড়েছিল প্রথমে। প্রথম গুলিটি শ্রমিকদের ভেতর থেকে দুষ্কৃতকারীরা ছুড়েছিল। সেখান থেকে গোলাগুলির সূত্রপাত হয়। দুঃখজনকভাবে সেখানে আমাদের একজন শ্রমিক নিহত হন। আরও সাতজন আহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও ১৩ সদস্য আহত হয়েছে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, আমরা এই পরিস্থিতি কখনোই চাই না, শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করাতে চাই না। আশুলিয়ায় এতদিন ধরে আন্দোলন চলছে, সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রেখে এসেছে। মালিকদের সঙ্গে কথা বলে কীভাবে বেতন আদায় করা যায়, তারা সেই চেষ্টা করছে। সেনাবাহিনীও একই কাজ করেছে। ২৪ সেপ্টেম্বর শ্রমিক-মালিকের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, যদি শ্রমিকদের বেতন না দেওয়া হয়, আমরা মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এ বিষয়ে আজ আলোচনা হয়েছে। যেসব কোম্পানির মালিক দীর্ঘদিন ধরে বেতন দিচ্ছেন না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আশুলিয়ার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দু-তিনটি কারখানায় বেতন না হওয়ার কারণে আজ শ্রমিকরা বাইপাইলে সড়ক অবরোধ করেছেন। আমরা কারখানার মালিকদের খুঁজছি, কিন্তু তারা পলাতক আছেন। ব্যাংকেও তারা প্রচুর ঋণগ্রস্ত। দ্রুতই আইনের আওতায় আনা হবে।
সেই আগের মতোই গুলি করে মানুষ হত্যার মতো ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গুলিটা এসেছিল শ্রমিকদের ভেতরে অনুপ্রবেশ করা কারও পক্ষ থেকে। এরই মধ্যে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।