নিজস্ব প্রতিবেদক :
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন অপরাধের কারণে ৪৫২টি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গত এক বছরে দুদক অনুসন্ধানে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৮৪৫টি। এরমধ্যে ৪৫২টি মামলা দায়ের করেছে।
গত এক বছরে মামলায় আসামি হয়েছেন এক হাজার ৭৪৩ জন। এক বছরে চার্জশিটে দেওয়া হয়েছে ৩৪৮টি।
এর আগে দুদকের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট পরবর্তী চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৭৬৮টি অনুসন্ধান করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এই সময়ের মধ্যে মোট মামলা হয়েছে ৩৯৯টি। তদন্ত শেষে ৩৩১টি মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। শতকরা হিসেবে ৮০ শতাংশের বেশি। এতে গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ৩৬ দশমিক ২৭টি। এসব মামলায় মোট ১ হাজার ২৬৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে ২৭ দশমিক ১৩ শতাংশ বা ২৪৩ জন সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন। কমিশন ২২৩টি সম্পদ বিবরণী জমার নোটিশও দিয়েছে। ড. মোমেন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর এ বছরের জানুয়ারিতে এক মাসে সর্বোচ্চ ৭০টি মামলা হয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে ৭১টি মামলা হয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের এমপি, মন্ত্রী ও সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে। মামলাগুলোতে ১ হাজার ২৬৪ জন অভিযুক্তের মধ্যে ২৪৩ জন সরকারি কর্মকর্তা, ১১৪ জন ব্যবসায়ী, ৯২ জন রাজনীতিবিদ, ৪৪৭ জন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী এবং ৩১ জন জনপ্রতিনিধি। তবে গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ১৮টি। অথচ ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে যেখানে ২২৩টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছিল। এর আগের বছর নিষ্পত্তি হয়েছিল ৬৬৩টি। ফলে নিষ্পত্তির হার এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে।
এদিকে, গত ১১ মাসে দুদকে মোট ১২ হাজার ৮২৭টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে শুধু গত বছরের নভেম্বরে জমা পড়েছে ৩ হাজার ৪০৬টি। দুদক চেয়ারম্যানের দপ্তর ও অন্যান্য দপ্তর থেকে পাওয়া প্রায় ৩ হাজার ৫০০টি অভিযোগ নিয়েও কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) গত ২০২৪ সালে মোট বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ছিল ৩০৬৬টি। এর মধ্যে উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত মামলার সংখ্যা ২৩৭টি। আর বিচার চলমান রয়েছে ২৮২৯টি মামলার। মূলত গত বছরের ৫ আগস্টের পর জমা পড়া অভিযোগগুলো নিয়ে কাজ করছে সংস্থাটি। অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে একের পর এক অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করছে তারা। আর অভিযোগগুলো প্রমাণসাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। এসব মামলার বেশিরভাগই ৫ আগস্টের পর হওয়া। আর এর আগের মামলাগুলোর কার্যক্রম অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। ওই বছর মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে মোট ২৭৪টি। আর গত ২০২৪ সালে দুদকে মোট অভিযোগ জমা পড়ে ১৫ হাজার ৮৪২টি। এর মধ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১ হাজার ৮৯৪টির। আর অভিযোগ থেকে নথিভুক্ত করা হয় ১২ হাজার ৯৬৩টি। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয় ১ হাজার ১২টি।