নিজস্ব প্রতিবেদক :
গত ১০ বছরে দেশে ১ লাখ কোটি টাকার বেশি খেলাপি ঋণ বেড়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটির দাবি, ২০১১-১২ অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৭২৫ কোটি। গত ১০ বছরে তা বেড়ে এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩ কোটি টাকা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাজধানীর হোটেল লেকশোরে সিপিডি আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের জন্য সামনে কী আছে’ শীর্ষক এক সেমিনারের এ তথ্য তুলে ধরা হয়। এটি উপস্থাপন করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, সরাসরি খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে ১ লাখ ৪৫ লাখ ৪৩৩ কোটি টাকা। এর বাইরে রাইটফ বা অবলোপন, পুনঃতফসিলিসহ মন্দঋণের পরিমাণ ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। এছাড়া অর্থঋণ আদালতে ৭২ হাজার ৫৪৩টি মামলার বিপরীতে এক লাখ ৭৮ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা আটকে আছে। সব মিলিয়ে দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের অংক দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৫৬ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। যার বড় অংশ ফেরত আসবে না।
তিনি বলেন, ব্যাংকে মধ্যবিত্ত মানুষের জমা অর্থ কমছে। ব্যাংকে সুশাসনে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে স্বাধীনতা না থাকায় এ নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাংক খাতে তথ্য সরবরাহে বড় ধরনের অভাব রয়েছে।
বিভিন্ন গোষ্ঠীর যোগসাজশে যে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা তৈরি হয়েছে, তার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আর প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার জন্যই তারল্য সংকটে পড়েছে ইসলামি ব্যাংকগুলো। দেশে ক্রোনি ক্যাপিটালিজমের মাধ্যমে অভিজাত ব্যক্তিরা তাদের লক্ষ্য পূরণে ব্যাংকগুলোকে বাহন হিসেবে ব্যবহার করছে বলেও উল্লেখ করেন ড. ফাহমিদা।
তার মতে, আদালতের নিষেধাজ্ঞাসহ ঋণ ও পুনঃতফসিলকৃত ঋণ ধরা হলে খেলাপির প্রকৃত পরিমাণ আরও বেশি হবে। ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক অনিয়মের কারণে মানুষ এখন ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন।
সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশোধনী বিল ২০০৩ অনুসারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন বহাল রাখার সুপারিশ করেছে সিপিডি।