শনিবার , ২৬ অক্টোবর ২০২৪ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অপরাধচিত্র বিশেষ
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. খুলনা
  6. খেলাধুলা
  7. চট্রগ্রাম
  8. জাতীয়
  9. জেলার খবর
  10. ঢাকা
  11. তথ্য-প্রযুক্তি
  12. প্রবাসের কথা
  13. বরিশাল
  14. বিনোদন
  15. ব্যাবসা-বাণিজ্য

ব্যক্তি বা দলকে নিয়ন্ত্রণ মানে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে নিয়ন্ত্রণ: দেবপ্রিয়

প্রতিবেদক
Newsdesk
অক্টোবর ২৬, ২০২৪ ৮:৫৮ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজনৈতিকভাবে কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলকে যদি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হয় তাহলে সঞ্চয়, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার ক্ষমতাগুলোকেও এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয় বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সংস্কারের কথা বলছেন, এই সংস্কারের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে।

ফলে অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা থাকলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বা নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের যে গতি দুইটাই কিন্তু অন্যরকমভাবে প্রভাবিত হবে। কাজেই আমাদের এখন নিষ্ঠুর ভালোবাসা দেখানোর সময় এসেছে।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) সম্মেলন কক্ষে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ: অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রসঙ্গ’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এ সব কথা বলেন।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, জনমানুষের একটা প্রশ্ন হলো রাজনীতিবিদরা কীভাবে ব্যবসায়ী আর ব্যবসায়ীরা কীভাবে রাজনীতিবিদ হয়ে গেল? এই যে দুষ্টুচক্র সৃষ্টি হলো, সেখানে আমাদের কী অংশগ্রহণ ছিল? এখানে দেশের জনমানুষের যে ব্যর্থতা তার থেকে দেশে উচ্চবর্গীয় মানুষের ব্যর্থতা অনেক বেশি। আর এটা সম্ভব হয়েছে চামচা পুঁজিবাদের জন্য। আর এভাবেই রাষ্ট্রকে কুক্ষিগত করে ফেলা হয়েছে। যখন রাষ্ট্র কুক্ষিগত হয়ে যায় তখন যাদের সবচেয়ে বড় ভূমিকা নেওয়ার কথা, যারা রাষ্ট্রকে সামনের দিকে নিয়ে যাবে তারা হলেন উচ্চবর্গীয়। তারা কেন ব্যর্থ হলেন, তারা কীভাবে কায়েমি স্বার্থের সঙ্গে অংশীদার হয়ে গেলেন সে বিষয়েও তাদের ব্যাখ্যা দিতে হবে।

তিনি বলেন, যে আলোচনা সংস্কারের জন্য হচ্ছে, সেটা উপরি কাঠামোর আলোচনা। যে কোনো রাষ্ট্রের অর্থনীতির ভিত্তির উপর সেটা দাঁড়ায়। অর্থনীতিই নির্ধারণ করবে কীভাবে আগাবো। যেসব নাগরিক কাজ করেছেন, আপনারা কি একবারও শুনেছেন ভূমিহীন মানুষের কি হবে? কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য কীভাবে দেব? এই আলোচনা উনাদের (সরকার) মধ্যে দেখি না।

দেবপ্রিয় বলেন, বর্তমান সরকারের দুটি ধারা – একটি হলো প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার। এই সংস্কারের জন্য কমিশন হচ্ছে। আরেকটা হচ্ছে নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার। সেই নির্বাচনী ব্যবস্থার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বলছি। খুব শিগগিরই কোনো একটা সার্চ কমিটি হবে। কিন্তু এর বাইরে রয়েছে অর্থনৈতিক সংস্কারগুলো। আমাদের অনুধাবন করার বিষয় হলো উপরের দুটি ধারার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক কী! সেটার জন্য আমাদের সংস্কার প্রয়োজন।

তিনি বলেন, সংস্কারের দুটি অংশ, একটা জমে থাকা সংস্কার। দ্বিতীয়ত হলো আমাদের উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সংস্কার বলেন আর যাই বলেন সেখানে যদি স্থিতিয়ান না পাই তাহলে আমার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বা নির্বাচনী ব্যবস্থার দিকে আগানোর যে গতি দুটোই কিন্তু অন্যরকমভাবে প্রভাবিত হবে। কেউ যদি মনে করেন আমরা শুধু প্রাতিষ্ঠানিক বা নির্বাচনী সংস্কারের কথা বলব। তবে অর্থনৈতিক বিষয়গুলো তার মতে চলবে, তাহলে আমরা ভুল বুঝতে পারছি।

তিনি বলেন, অর্থনীতির পরিস্থিতি শেষ বিচারে নির্ধারণ করে তেবে আমরা কি গতি ও পরিধি নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করতে পারব। একইসঙ্গে কত দ্রুত ও কত দেরিতে নির্বাচনী ব্যবস্থার কাছে পৌঁছাতে পারব। এখন এই জায়গা থেকে যারা দায়িত্বে আছেন তাদের বুঝতে হবে কোন কোন ক্ষেত্রে এ মুহূর্তে নজর দেওয়া জরুরি।

এ অর্থনীতিবিদ বলেন, আমাদের প্রকৃত মজুরি রক্ষা করতে হবে, কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য দিতে হবে। একই রকমভাবে সুরক্ষা খাতগুলোও রক্ষা করতে হবে। ছাত্রদের আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিতে হবে, স্বাস্থ্যসেবা যাতে ঠিকমতো চলে সেটা করতে, আইন- শৃঙ্খলার সুরক্ষা সকলকে একই রকম দিতে হবে। দেশে নিশ্চয়তা ও স্বস্তির মনোভাব বাড়াতে হবে। এটার জন্য অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যারা দায়িত্ববান আছেন তাদের নীতিমালাতে এটা স্পষ্ট করতে হবে। সেটা বাজেট সংশোধনের বা আগামী বাজেট প্রণয়নের মাধ্যমেও হতে পারে। সেটা দ্রুত, দক্ষতা, সমন্বয় এবং জবাবদিহিতার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে। অর্থনীতির ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি আশা করছি সরকার এই বিষয়টা বিবেচনায় রাখবে।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, প্রায়শই শুনি নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে, বাজার থেকে তুলে দিতে হবে। বিভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যদি ব্যক্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ দিই তার একটি অর্থনৈতিক তাৎপর্য আছে। একটি বিষয় হচ্ছে রাজনৈতিক অধিকার ক্ষুণ্ন করলে তার অর্থনৈতিক খাতে অংশ গ্রহণ করার অধিকারও ক্ষুণ্ন হয়। সেজন্য এ বিষয়গুলো আমাদের নজর দিয়ে দেখতে হবে। ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দল তাদের যদি রাজনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রণের কথা বলি তাহলে আমাদের মনে রাখতে হবে এটা একটি অর্থনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে। যা আগামী দিনের সঞ্চয়, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার ক্ষমতাগুলোও কিন্তু আমরা এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছি।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বিদেশিদের সহায়তায় সব সমস্যা সমাধান করে তেবে ভাবলে আমরা ভ্রান্ত জগতে বসবাস করছি। এখানে প্রত্যেকে যে যার দায়িত্ব পালন করতে হবে। বিশেষ করে উচ্চপর্যায়ের মানুষের ক্ষেত্রে যে ব্যর্থতাগুলো দেখেছি সেগুলো যেন নতুন প্রজন্মের কাছে আবার তুলে না ধরতে হয়। আমরা যেন ঠিকভাবে সংশোধন করতে পারি। তবে কোনোভাবে জবাবদিহিতার জায়গায় ঢিলা করতে হবে সেটা আমি বলিনি। আমরা যদি প্রতিমুহূর্তে প্রত্যেকের কাছে জবাবদিহি না চাই তাহলে কাজটা আমরা ভালোমতো পাবো না। আমাদের এখন নিষ্ঠুর ভালোবাসা দেখানোর সময় এসেছে।

তিনি বলেন, আমরা সংস্কার করে দিতে পারব সেটা আদৌ মনে করার কোনো কারণ নেই। তবে সময় এসেছে নির্বাচনী ইসতেহারের ভেতরে থেকে এই সংস্কারগুলি কেমন করে দেখেন এবং নির্বাচনী ইসতেহারে সংস্কারগুলো কেমন করে আসে।

সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) এর চেয়ার মুনিরা খানের সভাপতিত্বে সিজিএস- এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় সংলাপে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, অর্থনীতিবিদ ড. সায়মা হক বিদিশা, অর্থনীতিবিদ প্রফেসর আবু আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহিদুল ইসলাম জাহিদ, এফবিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু, মীর নাসির হোসেন ও মো: জসিম উদ্দিন বিসিআই-এর সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) ও সাবেক সভাপতি শাহেদুল ইসলাম হেলাল এনবিআর এর সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, অর্থনীতিবিদ ড.জামাল উদ্দিন আহমেদ, এফবিসিসিআই-এর স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম আবু ইউসুফ, বারভিডা’র সভাপতি আব্দুল হক, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান সবুর খান; ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক পারভেজ করিম আব্বাসী প্রমুখ।

সর্বশেষ - জাতীয়

আপনার জন্য নির্বাচিত