নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অন্য শক্তিধর দেশগুলোর মতো ভারত আমাদের নির্বাচন নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করেনি। তারা বলেছে, বাংলাদেশের নির্বাচন বাংলাদেশ করবে। ভারত পাশে ছিল বলে অনেক শক্তিধর দেশও আমাদের নির্বাচন নিয়ে অশুভ খেলা খেলতে পারেনি।
শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে সম্মেলনের উদ্বোধন করে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা।
এসময় সনাতন ধর্মের মানুষের উদ্দেশে তিনি বলেন, মাইনোরিটি ভাবনাটাই দাসত্বের দোসর, এটাকে ভেঙে ফেলতে হবে। নিজেদের মাইনরিটি কেন ভাববেন! এদেশের ইতিহাস, অর্জন সব বাঙালির অবদান। কিছু লোক তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জায়গা মন্দিরের জায়গা দখল করে কষ্ট দেয়। এরা যদিও রাজনৈতিক পরিচয়ে থাকে, আসলে এরা দুর্বৃত্ত। এই দুর্বৃত্তরা আমাদের অভিন্ন শত্রু। এদের প্রতিরোধ করতে হবে, কোনো বিকল্প নেই।
কেন ভারতবিরোধী মনোভাব বাড়ানো হচ্ছে? এ প্রশ্ন রেখে কাদের বলেন, ‘ইন্ডিয়া আউট’ বলে ক্যাম্পেইন চালিয়ে বৈরিতা সৃষ্টি সমীচীন নয়। যারা আন্দোলন আর নির্বাচনে ব্যর্থরা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এধরনের তৎপরতা চালায়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২১ বছর যারা শাসন করেছিলো, এই সময়ে তারা ভারতের সঙ্গে বৈরিতা তৈরি করেছে। যেগুলো দ্বিপক্ষীকভাবে শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনা করে সমাধান করা যায়, সেগুলোও তারা করেনি। শেখ হাসিনার সময় সীমান্তসহ নানা সমস্যা আলোচনা করে সমাধান করা হয়েছে। মোদী আর হাসিনার সম্পর্কের অনেক সন্দেহের দেয়াল ভেঙে দিয়েছেন। তিস্তা চুক্তিরও ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে, ধৈর্য ধরতে হবে সমাধান হবে। তিক্ততার সৃষ্টি করে এইসব সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।
এসময় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সম্পকে কাদের বলেন, সরকার সিন্ডিকেট সমর্থন করে না। যে বা যারাই এই সিন্ডিকেট করুক কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি যন্ত্রণা শেখ হাসিনা অনুভব করেন। তার ওপর আস্থা রাখুন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনেক দাবি পূরণ হয়নি স্বীকার করে তিনি বলেন, ঢাকেশ্বরী মন্দিরের ১০ কাঠা জমি শেখ হাসিনা দিয়েছেন। বাকি দখলে থাকা আরও জমির বিষয়েও যতো দ্রুত সম্ভব সমাধান হবে।
২০০১ সালে বিএনপি-জাময়াতের সংহিংসতার কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অন্য দল ক্ষমতায় আসলে হিন্দুদের মা-বোনেরা ইজ্জত নিয়ে থাকতে পারে না। ২০০১ সালের পর মনে হয়েছিল ১৯৭১ সাল। সাম্প্রদায়িক দৃষ্টি থেকে তারা এসব করেছে। তারা ভেবেছিলাো হিন্দুরা আওয়ামী লীগের ভোটার, তাই তাদের দেশছাড়া করার চেষ্টা করেছে। যতো দিন এই সরকার আছে ততো দিন মাইনরটির পাশে আছে, থাকবে। যারা স্বাধীনতা বিরোধী তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া দরকার।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জেএল ভৌমিকের সভাপতিত্বে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার।