নিজস্ব প্রতিবেদক :
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে সেনাবাহিনী চায় নির্বাচন কমিশন।
সোমবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের পর সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লে. জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
পিএসও ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন হোক। নির্বাচন কমিশন মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে এ বিষয়ে জানাবেন। রাষ্ট্রপতি চাইলে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন হবে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহায়তা করবো।’
সশস্ত্র বাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে কিনা সে বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য না করলেও তিনি বলেন, আগের নির্বাচনগুলোর মতোই এই বাহিনী নির্বাচনে থাকবে।
তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৫ হাজারের বেশি সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিলো। এবার যদি বেশি প্রয়োজন হয়, সেভাবেই মোতায়েন করা হবে। অবশ্যই সব সময় প্রস্তুতি আছে। গতবার ৩৮৮ উপজেলায় ছিলো।
তিনি জানান, এবারও সশস্ত্র বাহিনী ‘এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’ বিধানের অধীনে থাকবে।
সেনাবাহিনীর হাতে বিচারিক ক্ষমতা (ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার) থাকবে কিনা তা নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি।
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, কত সংখ্যক সেনা মোতায়েন হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। রাষ্ট্রপতি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।
প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার আরও বলেন, তারা (ইসি) চাচ্ছে একটা সুন্দর, সুষ্ঠু ও ফ্রি ফেয়ার নির্বাচন হোক। এ ব্যাপারে আমাদের সামান্য সন্দেহ নেই। তারা অত্যন্ত সিরিয়াস। আমরা সশস্ত্র বাহিনী যদি ডেপ্লয় হই, আমার অবশ্যই সাহায্য-সহায়তা করব।
এর আগে ভিন্ন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারনে ২০০৮ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য হিসেবে সেনা মোতায়েন করা হয়েছিলো। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে তারা সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছিলো।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের আগে-পরে মিলিয়ে ১০ দিন বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার জন্য ‘এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’ বিধানের অধীনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর সেনাবাহিনী মোতায়েন রাখা হয়।
২০১৮ সালের ওই নির্বাচনে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিচারিক ক্ষমতা (ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার) দিয়ে সেনা মোতায়েন চাইলেও সেটি হয়নি।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে ৭ লাখ সদস্য ভোটের মাঠে কাজ করবেন। এর মধ্যে আনসার সদস্য ৫ লাখ ১৬ হাজার, পুলিশ ও র্যাবের ১ লাখ ৮২ হাজার ৯১, কোস্টগার্ডের ২ হাজার ৩৫০, বিজিবির ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন নিয়োজিত থাকবেন।