নিজস্ব প্রতিবেদক :
পণ্যের আমদানি শুল্ক কমানোর সুফল ভোক্তাপর্যায়ে পেতে আরও কিছু সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ. এইচ. এম সফিকুজ্জামান।
শুক্রবার ঢাকায় এফডিসিতে দ্রব্যমূল্য নিয়ে এক ছায়া সংসদে এ কথা জানান তিনি। প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, সরকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধে আন্তরিকভাবে কাজ করছে। রমজান মাসের চাহিদা বিবেচনায় এরই মধ্যে কয়েকটি পণ্যের আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে। তবে ভোক্তাপর্যায়ে এর সুফল পেতে কিছুটা সময় লাগবে।
তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালানো হচ্ছে। বাজার মনিটরিংয়ের বিরুদ্ধে কোনো প্রভাবশালী মহলের চাপ নেই। পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাসমূহ সমন্বিতভাবে কাজ করছে। বাণিজ্য কূটনীতিকে সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে। বাংলাদেশ কোনোভাবেই শ্রীলঙ্কা বা ভেনিজুয়েলা হবে না।
অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিদপ্তরের যুদ্ধ চলবে জানিয়ে এ. এইচ. এম সফিকুজ্জামান বলেন, বর্তমানে বিশ্বে ৩৮তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ। মানুষের কষ্ট লাগবে সরকার বাজার ব্যবস্থাপনায় সুশাসন নিশ্চিতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এরই মধ্যে সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু হয়েছে, যা পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থাকে পর্যবেক্ষণ করবে। কেউই রাষ্ট্রের চেয়ে শক্তিশালী নয়।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি আমাদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষ কীভাবে যে জীবন ধারণ করছে সেটা কল্পনা করা যায় না। সাধারণ মানুষের সঞ্চয় তলানিতে নেমে দাঁড়িয়েছে। ধার-কর্জ করে চলছে। মানুষ কষ্টে আছে। মধ্যবিত্তরা দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে নীরব যন্ত্রণায় ভুগছে।
তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতেও ব্যবসায়ীরা এখন কম লাভে সন্তুষ্টি পাচ্ছে না। ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফা ও অতিলোভ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। অসাধু ব্যবসায়ীদের কঠোর হাতে রুখতে হবে। দ্রব্যমূল্য বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আয় বাড়লে এবং কর্মসংস্থান তৈরি হলে ভোক্তাদের কষ্ট কম হয়। কিন্তু সবকিছুর দাম বাড়লেও মধ্যবিত্তের উপার্জন বাড়েনি। নতুন কর্মসংস্থান বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে বাজার সিন্ডিকেট দ্রব্যমূল্যকে উসকে দিচ্ছে।
তবে বর্তমান সরকারের জন্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়াও রাজনৈতিক, কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক, আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা রক্ষা, অর্থপাচার রোধ, দুর্নীতি প্রতিরোধ, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ, জ্বালানি সংকট মোকাবিলা ও রিজার্ভের ঘাটতি পূরণসহ আরও নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
ছায়া সংসদে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে প্রাইম ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন ড. এস এম মোর্শেদ, উন্নয়ন বিশ্লেষক সাজিদ রায়হান, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক সেলিম মালিক ও সাংবাদিক মো. গোলাম ময়নুল আহসান। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র দেওয়া হয়।