নিজস্ব প্রতিবেদক :
শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, ঢাকার সাতটি কলেজকে আলাদা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে। কলেজগুলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার সিদ্ধান্ত ‘অপরিণামদর্শী’ ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, শিক্ষার মান নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে, অনেক বৈষম্য আছে। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছিলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে কলেজগুলোকে বের করে একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ আলাদাভাবে স্বাধীন সত্তা হিসাবে কী করে সংগঠিত করা যায়, সেজন্য একটি কমিটি করেছিলাম। সে কমিটির প্রাথমিক রিপোর্ট প্রায় শেষ হয়ে এসেছে।
বুধবার ঢাকা কলেজের ১৮৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এসব কথা বলেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আমরা একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি অতি শিগগিরই করতে যাচ্ছি। এই কলেজগুলো একত্রিত একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেলে, কলেজগুলোকে কীভাবে আরও উৎসাহিত করা যায়, তাদের সুযোগ-সুবিধা, অবকাঠামো কীভাবে আরও বাড়ানো যায়, সমন্বিত প্রাতিষ্ঠানিক রূপ কীভাবে দেয়া যায়, সেটার নাম তোমাদের (শিক্ষার্থীদের) সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই দেয়া হবে।
তিনি বলেন, সাতটি কলেজকে অধিভুক্ত করা ছিল একটি অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত। এতে অর্ন্তভুক্ত হয়ে এসব কলেজের শিক্ষার্থীদের নানা হয়রানির শিকার, পরীক্ষা সংক্রান্ত জটিলতা ও বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ঢাকা কলেজসহ রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয় ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি।
অন্য কলেজগুলো হল- ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, বর্তমানে যারা অনার্স বা মাস্টার্সে আছে, সেটা যেন কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়। বরং যে অসুবিধাগুলো আছে, তা নিয়ে এখনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করব। তবে অনুরোধ করব, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় যে অসুবিধা আছে, সেগুলো দূর করতে আরও সচেতন হওয়া। আমরা যাই করি না কেন, পরবর্তী নির্বাচিত সরকারকে তা বৈধতা দিতে হবে। আমরা আশা করি, সেই বৈধতা দেওয়া হবে।
অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবে জানিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের কাছে একটাই অনুরোধ, নতুন সময় এসে অনেক অস্থিরতা গিয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আমরা সম্পূর্ণ অভিভাবকহীনতায় পেয়েছি, সেখানে কর্তৃপক্ষও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমাদের স্বল্পকালীন সময়ে একটা দৃষ্টান্ত হিসেবে রেখে যেতে চাই, যাতে ভবিষ্যৎ সরকারের কাছে এটা নিদর্শন হিসেবে থাকে।
তিনি আরও বলেন, তোমাদের কোনো অভিযোগ থাকলে আমাদের কাছে জানিও। তবে আর রাস্তা অবরোধ নয়, বিশৃঙ্খলা নয়, আমরা শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠু পরিবেশ চাই। যেখানে ছাত্র শিক্ষকদের মধ্যে সুসম্পর্ক ফিরে আসবে।
অনুষ্ঠানে মূল আলোচক ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম।